SIR in West Bengal

এনুমারেশন পর্ব শেষে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়লেন কত জন? শীর্ষে কোন জেলা? মিলল পরিসংখ্যান

শুনানিপর্ব শুরুর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছে। শুনানিপর্ব শুরুর আগে আগামী ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৩৬
Total number of names deleted from draft voter list in SIR process in West Bengal

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পশ্চিমবঙ্গের খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮ লক্ষ ১৭ হাজার ৮৫১। বৃহস্পতিবার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়ার পর্ব শেষ হওয়ার পরে নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে।

Advertisement

শুনানিপর্ব শুরুর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর যে খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছে সেই অনুযায়ী রাজ্যে মৃত ভোটারের সংখ্যা ২৪ লক্ষ ১৯ হাজার ১৫৮ জন। এ ছাড়া, ১২ লক্ষ ১০ হাজার ৪৩৪ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোনও ভোটারের খোঁজে সংশ্লিষ্ট বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) যদি তাঁর বাড়ি থেকে তিন বার বা তার বেশি ঘুরে আসেন, কিন্তু ওই ভোটারের খোঁজ যদি তার পরেও না-পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে তাঁদের নিখোঁজ তালিকায় রাখা হয়।

রাজ্যে আপাতত বাদ পড়া ভোটারের তালিকা।

রাজ্যে আপাতত বাদ পড়া ভোটারের তালিকা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কমিশনের দেওয়া হিসাব জানাচ্ছে, রাজ্যে মোট ১৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৮১৬ জন ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন। একাধিক জায়গার ভোটার তালিকায় নাম ছিল এমন ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৪৭ জনের নাম একটি জায়গায় রেখে বাকি জায়গা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫৭ হাজার ৬৯৬ জনকে রাখা হয়েছে ‘অন্যান্য’ তালিকায়। তাঁদের নামও শুনানির আগে খসড়া তালিকা বাদ পড়তে চলেছে। এঁরা মূলত ‘ভুয়ো’ ভোটার বলে কমিশন সূত্রের দাবি। জেলাওয়ারি হিসাবে বাদ পড়া তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ( ৮ লক্ষ ১৬ হাজার), উত্তর ২৪ পরগনা (৭ লক্ষ ৯২ হাজার) এবং হাওড়া (৪ লক্ষ ৪৭ হাজার)। বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা উত্তর কলকাতায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার এবং দক্ষিণ কলকাতায় ২ লক্ষ ১৬ হাজার।

আগামী ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে পশ্চিমবঙ্গে। সেই তালিকায় কোনও অভিযোগ থাকলে, ত্রুটি থাকলে কমিশনকে জানাতে হবে। তার ভিত্তিতে হবে শুনানি। তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে দেখে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবে কমিশন। তা প্রকাশ করা হবে ২০২৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। সূত্রের খবর, ভোটারদের মোট তিনটি তালিকায় ভাগ করেছে কমিশন— নিজস্ব ম্যাপিং, প্রজেনি ম্যাপিং এবং নন-ম্যাপিং। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (রাজ্যে শেষ বার এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সালে) যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা নিজস্ব ম্যাপিংয়ের তালিকায় পড়ছেন। এমন ২ কোটি ৯৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৮৮ জন ভোটারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না-থাকলেও বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম আছে, তাঁরা প্রজেনি ম্যাপিং তালিকায় রয়েছেন। রাজ্যে তেমন ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৩৯ জন।

এ ছাড়া, ৩০ লক্ষ ভোটার রয়েছেন, যাঁদের নিজেদের নাম বা আত্মীয়ের নামও ২০০২ সালের তালিকায় নেই। তাঁরা নন-ম্যাপিং তালিকাভুক্ত। এই তৃতীয় তালিকার সকলকেই কমিশনের তরফে শুনানিতে ডাকা হবে। তাঁদের তথ্যপ্রমাণ, নথি যাচাই করে দেখা হবে। এ ছাড়া, প্রথম দুই তালিকার ভোটারদের মধ্যে কারও তথ্যে সন্দেহ থাকলে তাঁদের শুনানিতে ডাকা হতে পারে। গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সাতটি রাজ্যে এই প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। সবচেয়ে বেশি সময় দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশকে। তবে পশ্চিমবঙ্গের সময়সীমা আর বাড়ানো হয়নি। পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী এই রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন