Rabandhara An Offbeat Destination

মেঘলা দিনে বদলে যায় রূপ, ছোট্ট ছুটিতেই দেখে আসা যায় রাবণধারা, কোথায় সেই ঠিকানা?

রাতে ট্রেনে চাপলে দুপুরেই পৌঁছনো যায়। পড়শি রাজ্যেই আছে বর্ষার এক সুন্দর ঠিকানা। চলুন রাবণধারা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১০:৫১
বর্ষার আদর্শ গন্তব্য হতে পারে রাবণধারা। কী ভাবে যেতে হয়, জেনে নিন।

বর্ষার আদর্শ গন্তব্য হতে পারে রাবণধারা। কী ভাবে যেতে হয়, জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।

গ্রীষ্মে বড্ড গরম, চড়া রোদ। শীতে আবহাওয়া মনোরম। তবে মেঘলা দিনেই সেই রূপ দেখার মতো। বৃষ্টিভেজা পাহাড়, বয়ে চলা নদী, থমকে যাওয়া জলস্রোত, উচ্ছল ঝর্না— সব নিয়েই বর্ষার রূপ।

Advertisement

কালাহান্ডি। একদিন যে নাম জু়ড়ে গিয়েছিল দুর্ভিক্ষ-অনাহারের সঙ্গে, বাংলার পড়শি রাজ্যের সেই স্থানই এখন আবিষ্কৃত অন্য ভাবে, অন্য রূপে। সেই রূপের সাক্ষী হতে চান? চলুন তবে রাবণধারা।

রাবণধারা কালাহান্ডির জনপ্রিয় জলপ্রপাত। জলপ্রপাতের নামেই তৈরি হয়েছে ওড়িশা সরকারের নেচার ক্যাম্প। আর সেই স্থানকে কেন্দ্র করেই ক্রমশ পর্যটনের বিকাশ হচ্ছে।

রাবণধারা নেচার ক্যাম্প থেকে এ ভাবেই উপভোগ করা যায় বর্ষার প্রকৃতি।

রাবণধারা নেচার ক্যাম্প থেকে এ ভাবেই উপভোগ করা যায় বর্ষার প্রকৃতি। ছবি: সংগৃহীত।

শুধুমাত্র যে একটি জলপ্রপাত বা ঝর্না দেখতে ওড়িশা যেতে হবে, তা কিন্তু নয়। বরং এই স্থানের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন উত্তরবঙ্গের কোনও গ্রামের। ঘন সবুজ পাহাড়, তারই ঢাল বেয়ে নেমে আসা মেঘ, বৃষ্টিস্নাত অরণ্য, পাহাড় ঘেরা জলাধার প্রতি মুহূর্তে মনে করাবে ডুয়ার্সের কোনও ছোট্ট গ্রামের কথা। বর্ষার কালাহান্ডি একেবারেই রুক্ষ নয়, বরং তার প্রতিটি স্থানে রয়েছে প্রকৃতির সজীব স্পর্শ।

রাবণধারা কোনও একটি জলপ্রপাত নয়। অরণ্যের গহিনে রয়েছে একাধিক ছোট-বড় ঝর্না। বড় রাবণধারা, সানা রাবণধারা নামে দু’টি জলপ্রপাত রয়েছে। যদি ট্রেকিং করার মানসিকতা থাকে তা হলে পৌঁছোনো যায় ‘উপর রাবণধারা’তেও। বর্ষায় সেই রূপ সবচেয়ে সুন্দর হলেও, বর্ষা পার করেই যাওয়া ভাল। আর যদি অগস্টেই সেখানে যেতে চান, তা হলেও হবে। নেচার ক্যাম্পে থেকে প্রত্যক্ষ করতে পারবেন প্রকৃতির অপরূপ রূপ।

বাঘ, ভালুক না থাকলে এই বনানী অসংখ্য বন্যপ্রাণের আশ্রয়স্থল। পাখি দেখিয়েদের কাছেও এর গুরুত্ব রয়েছে। অনেক রকম প্রজাতির পাখি রয়েছে এই অঞ্চলে। আশপাশে ঘোরার জন্য রয়েছে চিল্ড্রেন্স পার্কও। আসলে রাবণধারা জলপ্রপাত সংলগ্ন এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। মূলত শীতেই ভিড় করেন তাঁরা।

রাবণধারা ঝর্না।

রাবণধারা ঝর্না। ছবি: সংগৃহীত।

তবে কোলাহল বর্জিত কালাহান্ডি উপভোগ করতে হলে, বর্ষা বা তার পরের সময়টাই ভাল। ওড়িশার পুরী, ভুবনেশ্বর কোরাপুট, রম্ভা, দেওমালি নিয়ে যত হইচই, চর্চা তার বিন্দুমাত্র নেই এই স্থান নিয়ে। তবে ঘোরার পাশাপাশি থাকারও সুবন্দোবস্ত রয়েছে এখানে। খাওয়া-দাওয়ারও অসুবিধা নেই। শুধু এক বার উৎসাহ নিয়ে বেরিয়ে পড়ার অপেক্ষা। এখানেই রয়েছে ভাতংপাদর জলাধার। ছোট ছোট টিলা জলাধারের সৌন্দর্যে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।

কালাহান্ডিতে ঘুরে নেওয়া যায় ডোখরিচঞ্চরা জলপ্রপাত, সাসপাদর জলপ্রপাত। রয়েছে কারলাপাত অভয়ারণ্যও। বর্ষায় অবশ্য অভয়ারণ্যের সর্বত্র পর্যটক প্রবেশের অনুমতি থাকে না। তাই যাওয়ার আগে এক বার জেনে নেওয়া দরকার।

কী ভাবে যাবেন?

রাবণধারার কাছে বড় শহর হল ভবানীপাটনা। ভবানীপাটনা রেল স্টেশনও আছে। হাওড়া থেকে রাত ১০টা১০ এর-সমলেশ্বরী এক্সপ্রেস ধরলে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে পৌঁছোবেন নরলা রোড স্টেশনে। সেখান থেকে গাড়িতে রাবণধারা ৩৮ কিলোমিটারের মতো। ট্রেনে বা বাসে ভুবনেশ্বর এসে সেখান থেকে ট্রেন ধরে ভবানীপাটনা পৌঁছে কালাহান্ডি ঘোরা যায়। ভুবনেশ্বর-জুনাগড় রোড এক্সপ্রেস ধরে ভবানীপাটনা পৌঁছতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

ভবানীপাটনায় একাধিক হোটেল আছে। তবে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে গেলে ওড়িশা ইকো ট্যুরিজ়মের কটেজই সবচেয়ে ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন