Ranchi Patratu Valley

ঘরের কাছেই আছে ‘সিল্ক রুট’, সর্পিল পথের সৌন্দর্য উপভোগে যেতে পারেন পত্রাতু ভ্যালি

পুজোর ছুটির জন্য ট্রেন, বাস, বিমানের টিকিট কাটা হয়নি? হতাশ না হয়ে চারচাকাকেই সঙ্গী করে নিন এ বছর। শরতের ছুটি কাটানোর জন্য কাছে ও দূরে নানা জায়গা রয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনে থাকছে সড়কপথে ভ্রমণের চেনা-অচেনা নানা ঠিকানা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৮
পত্রাতুর এই পথের সৌন্দর্য উপভোগে একবার ঘুরে আসবেন নাকি?

পত্রাতুর এই পথের সৌন্দর্য উপভোগে একবার ঘুরে আসবেন নাকি? ছবি: সংগৃহীত।

সিকিমে ‘সিল্ক রুটের’ সর্পিল পথের সৌন্দর্য উপভোগে দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন। কিন্তু, প্রস্তুতি ছাড়া সিকিম যাওয়া যায় না! তা-ও আবার দুর্গাপুজোর সময়। বদলে ঘুরে নিতে পারেন হাতের কাছের পত্রাতু ভ্যালিতে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড। সে রাজ্যেরই একটি বড় শহর রাঁচি। জলপ্রপাতের জন্য এ শহরের খ্যাতি ছিলই। তবে পত্রাতু ভ্যালি সেই তালিকায় খানিক নবীন।

রাঁচি শহর থেকে এর দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। পত্রাতুর সৌন্দর্য শুরু হয় শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে খানিক এগোলেই। চড়াই শুরু হওয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় প্রকৃতির উজাড় করে রূপ। বর্ষার দিনে পত্রাতু ঘন সবুজ। তবে, শীতেও এ পথের টান অমোঘ।

অনুচ্চ পাহাড়ের বুকে এঁকেবেকে উঠেছে কালো পিচের মসৃণ রাস্তা। তবে সর্পিল পথের সৌন্দর্য উপভোগ্য হয়ে ওঠে, বেশ কিছুটা উপরে ওঠার পর ভিউ পয়েন্টে দাঁড়ালে। এখান থেকে দেখা পাহাড়ি রাস্তার সৌন্দর্য, রেশমপথের সঙ্গে তুলনীয়। চারপাশ জুড়ে ঢেউ খেলানো পাহাড়, আরা দূরে দেখা যায় পত্রাতু জলাধার।

এখানে খানিক জিরিয়ে, দৃশ্যাবলি ক্যামেরাবন্দি করে ফের চারচাকায় এগোতে হবে। খানিক পরেই পৌঁছে যাবেন বিশাল জলাধারের সামনে। এখানে রয়েছে স্পিডবোটে চাপার ব্যবস্থা। জলাধারের পাশেই সুন্দর সাজানো হোটেল-রেস্তরাঁ, দুই-ই মিলবে। জলাধারের পাশেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড পর্যটন দপ্তরের ‘সরোবর বিহার’ হোটেল।

পাহাড় ঘেরা জলাধারের রূপ উপভোগে স্পিড বোটে ভেসে পড়ুন। স্পিডবোটের ভাড়া ৭৫০ টাকা। একসঙ্গে ছ’জন চাপতে পারবেন। ১০ মিনিটের স্পিড-বোট যাত্রা বেশ রোমাঞ্চকর। টাপু নামে ছোট্ট একটি দ্বীপের পাশ দিয়ে বোট ঘুরিয়ে আনা হয়।

পত্রাতু ভ্যালি ঘুরে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সারা দিনটাই বরাদ্দ করতে পারেন। তবে হাতে যদি সময় কম থাকে, সে দিনই ঘুরে নিতে পারেন টেগোর হিল, পালানি ফল্‌স।

পালানি ফল্স

পত্রাতু থেকে পালানির দূরত্ব ৯ কিলোমিটার। রাস্তাটি উপভোগ্যও। বর্ষায় দূর থেকে জলপ্রপাত দেখলে মনে হবে, সবুজের বুক চিরে সাদা দুধের ধারা নামছে। পায়ে পায়ে কাছ বরাবর চলে যেতে পারেন। আগে মেঠো পথ থাকলেও এখন সেখানে পাকা রাস্তা তৈরি হচ্ছে।

টেগোর হিল

মোড়াবাড়িতে রয়েছে একটি অনুচ্চ পাহাড়। পরিচিত টেগোর হিল নামে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বিশ্রামস্থল ছিল এখানে। সেখান থেকেই স্থানটির নামকরণ। টেগোর হিলে পর্যটকেরা আসেন সূর্যাস্ত দেখতে। পাহাড়ের মাথা থেকে অনেক দূর পর্যন্ত চারপাশের দৃশ্য দেখা যায়।

রকগার্ডেন ও কাঁকে জলাধার

দার্জিলিঙের রকগার্ডেনের কথা অনেকেই জানেন। এখানেও কিন্তু রকগার্ডেন রয়েছে। সাজানো সেই পার্কে লোহার ঝোলানো সেতু রয়েছে। বাগান পেরিয়ে গেলেই দেখা মিলবে কাঁকে জলাধারের। গোন্ডা পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। এখান থেকে রাঁচি শহরে জল সরবরাহ হয়।

যেতে কত ক্ষণ সময় লাগবে?

কলকাতা থেকে পত্রাতু ভ্যালির দূরত্ব ৪২১ কিলোমিটার। একটানা গাড়ি চালালে যেতে ১০-১২ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে, পথে বিশ্রাম নিয়ে যাওয়াই ভাল।

কী ভাবে যাবেন?

১৬ এবং১৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে গেলে কলকাতা থেকে রাঁচির দূরত্ব ৪০১ কিলোমিটার। যেতে ৯-১০ ঘণ্টা লাগবে। রাঁচি থেকে পত্রাতু আরও ঘণ্টাখানেকের পথ। কলকাতা থেকে খড়্গপুর, লোধাশুলি, ধলভূমগড়, ঘাটশিলা, গালুডি পার করে টাটা রোড ধরে পৌঁছতে হবে রাঁচি।

কোথায় থাকবেন?

পত্রাতু জলাধারের পাশেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড পর্যটন দপ্তরের দু’টি থাকার জায়গা, পত্রায়ন বিহার ও সরোবর বিহার।

আর কী দেখবেন?

রাঁচিতে ঘুরে নেওয়া যায় হুড্রু, জোনা ও দশম ফল্‌স। ঘুরে নিতে পারেন পালামৌ ও নেতারহাট।

Advertisement
আরও পড়ুন