তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
নতুন বছর পড়তে না-পড়তেই ভোটের ময়দানে নেমে পড়ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০২৬ সালের প্রথম সপ্তাহেই তিনি জেলা সফর শুরু করে দিচ্ছেন। উত্তরবঙ্গ থেকেই শুরু হবে অভিষেকের কর্মসূচি।
বিধানসভা ভোটকে নজরে রেখে অভিষেক যে জেলা সফরে যাবেন, সেই পরিকল্পনা তৃণমূলে ছিলই। পুজোর পরে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, ডিসেম্বরে শুরু হবে তাঁর কর্মসূচি। তবে শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। ডিসেম্বরে কয়েক সপ্তাহ ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে যেতে হয়েছিল অভিষেককে। এ বার নতুন বছর পড়তেই সেই কর্মসূচি শুরু করছেন তিনি।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩ জানুয়ারি অভিষেক তাঁর অভিযান শুরু করতে চলেছেন জলপাইগুড়ি থেকে। একই দিনে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে আলিপুরদুয়ারেও। বুধবার রাত পর্যন্ত কোচবিহার বা দার্জিলিঙের কর্মসূচির দিনক্ষণ স্পষ্ট হয়নি। আবার উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, ৭ জানুয়ারি ইটাহারে অভিষেকের কর্মসূচি হবে।
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে নবজোয়ার যাত্রা করেছিলেন অভিষেক। এ বার একই রকম ধাঁচের কর্মসূচি হচ্ছে না। কোথাও জনসভা আবার কোথাও রোড শো হতে পারে। সেই সূচি এবং কর্মসূচির সামগ্রিক রূপরেখা বুধবার রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে শীঘ্রই তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে খবর। তৃণমূলের প্রথম সারির এক নেতার বক্তব্য, জানুয়ারি মাসে বহু জায়গায় স্থানীয় উৎসব থাকে। সে সব উৎসবে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক, এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত থাকেন। সে সব দেখেই সূচি চূড়ান্ত করতে হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে যে পরিকল্পনা হয়েছিল, তাতে ঠিক ছিল, কাছাকাছির কয়েকটি জেলা মিলিয়ে কর্মসূচি শেষ করে অভিষেক কলকাতায় ফিরবেন। এক দিন বা দু’দিন ফাঁক দিয়ে ফের সফরে যাবেন। নবজোয়ারের সময়ে টানা দু’মাস তিনি জেলায় থেকেই কর্মসূচি করেছিলেন। তার মাঝেই তাঁকে সিবিআই তলব করেছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। সেই সময়ে তাঁর যাত্রা চলছিল বাঁকুড়ায়। সেখান থেকে কলকাতা ফিরে নিজ়াম প্যালেসে হাজিরা দিয়েই আবার তিনি ফিরে গিয়েছিলেন নিজের কর্মসূচিতে। আবার লোকসভা ভোটের সময়ে দেখা দেখা গিয়েছিল, সকালে বেরিয়ে জেলায় কর্মসূচি করে প্রতি দিন বিকেলে কলকাতায় ফিরে নির্বাচনী সংগঠনের কাজ সামলেছিলেন তিনি।
জানুয়ারির জেলা সফর শুরুর আগে জোড়া ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন অভিষেক। প্রথমটি আগামী শুক্রবার। বৈঠকের বিষয় মমতার সরকারের ‘উন্নয়নের পাঁচালি’। সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা এখানে থাকবেন। ১৫ বছরের ‘উন্নয়ন’-এর বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী ১০ বছরের ‘লক্ষ্য’ কী, তা কী ভাবে জনমানসে তুলে ধরতে হবে, সেটাই এই বৈঠকে ব্যাখ্যা করবেন অভিষেক। পরের বৈঠকই হবে আগামী রবিবার। এসআইআরের দ্বিতীয় পর্বে দলের কাজ কী হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দিতে রবিবাবের বৈঠক করবেন অভিষেক। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে এক লক্ষ উপস্থিতি চাইছেন অভিষেক। এসআইআর শুরুর আগে এবং এসআইআর চলাকালীনও জোড়া ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন তিনি। জেলা ধরে ধরে খামতি চিহ্নিত করে প্রথম দফায় শেষ ১৫ দিন ১৩ জন নেতাকে ব্যাগ গুছিয়ে জেলায় জেলায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কাজ কেমন হয়েছে, রবিবারের বৈঠকে তারও পর্যালোচনা হতে পারে।