(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় কমিশনের আধিকারিক সীমা খন্না (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরুর আগে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের কন্যা-সহ পরিবারের লোকজনের ‘সুবিধাজনক নিয়োগ’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরের শুনানি পর্ব শুরু হয়েছে শনিবার। সেই দিনই সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশনের এক মহিলা আধিকারিকের নাম উল্লেখ করে আক্রমণ শানালেন অভিষেক। তিনি সীমা খন্না। আপাতত জাতীয় নির্বাচন কমিশনে ডিজি (তথ্যপ্রযুক্তি) পদে কর্মরত। অভিষেকের অভিযোগ, কমিশনের অ্যাপ ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাই মূল ‘কলকাঠি’টি নাড়ছেন।
কিন্তু কে এই সীমা? কোন পথে তিনি নির্বাচন কমিশনের এই পদে পৌঁছোলেন?
পটনার নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক হন সীমা। তার পর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান দিল্লির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মাস্টার ডিগ্রি অর্জনের পর পিএইচডি করেন দিল্লি আইআইটি থেকে। ২০২১ সালে তাঁকে জাতীয় তথ্যকেন্দ্রের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল হিসাবে নিয়োগ করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
দু’দশক ধরে বিভিন্ন সংস্থায় তথ্য এবং সংযোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে সীমার। অ্যাপলিকেশন, ইমেল, মেসেঞ্জার এবং সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাঁর পারদর্শিতা রয়েছে। কোভিড পর্বে কেন্দ্রীয় সরকার ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ তৈরি করেছিল। সেই অ্যাপ নির্মাণে যে কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে সীমা ছিলেন অন্যতম। সেই পর্বে ‘আরোগ্য সেতু’ হয়ে উঠেছিল শনাক্তকরণের বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্কের ডিরেক্টর (অপারেশন) হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি।
অভিষেকের অভিযোগ, বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকের আইডি, পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। সেই কাজে সীমাই মূল হোতা বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা। তাঁর এ-ও দাবি, সীমা কার সঙ্গে কী চ্যাট করেছেন, তার স্ক্রিনশটও তৃণমূলের হেফাজতে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে তা জমাও দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। অভিষেক বলেন, ‘‘সীমা খন্না ডিজি, আইটি। কমিশনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর যদি ক্ষমতা থাকে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুন। আমার কাছে চ্যাটের স্ক্রিনশট রয়েছে। কোন সফট্অয়্যারের মাধ্যমে আপনি এক কোটি ৩৬ লক্ষ বাঙালিকে সন্দেহের তালিকায় ঢুকিয়ে দিলেন? কী ভাবে আপনি করতে পারেন?’’
শনিবার অভিষেক জানিয়েছেন, ৩১ তারিখ তিনি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেখানেও সীমার ভূমিকা নিয়ে সরব হবেন অভিষেক। সামনাসামনি জ্ঞানেশকে দেখাবেন, সীমার কাণ্ডকারখানার তথ্য তাঁদের হাতে রয়েছে।