Abhishek On Lionel Messi Event In Kolkata

দেশে ফিরেই যুবভারতীকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক

অভিষেকের প্রশ্ন, যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার এক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ জনগণের কাছে ক্ষমা চান। তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি। এর পরেও কেন এত প্রশ্ন উঠছে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:১৫
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে ছিলেন। মঙ্গলবার দিল্লিতে নেমেই যুবভারতীকাণ্ড নিয়ে সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, “যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা হয়েছে তার এক ঘণ্টার মধ্যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। ইতি মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। তার পরেও আমাদের কেন বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে?”

Advertisement

কুম্ভ মেলার প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বলেন, “চলতি বছর কুম্ভ মেলায় যখন বহু মানুষের মৃত্যু হয়, তখন তো কেউ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়নি প্রধানমন্ত্রী বা যোগী আদিত্যনাথকে?” তাঁর সংযোজন, “গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সেই নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠেছে? এই ঘটনায় কোনও বিজেপি নেতাকে একটি প্রশ্নেরও সম্মুখীন হতে হয়েছে? কোনও তদন্তও হয়েনি। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। এমনকি, ক্ষমাও চাওয়া হয়েনি।”

অভিষেকের প্রশ্ন, যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার এক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ জনগণের কাছে ক্ষমা চান। তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি। এর পরেও কেন এত প্রশ্ন উঠছে? তিনি জানান, এই ঘটনায় পুলিশকর্তা এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, শনিবার যুবভারতীতে ফুটবল তারকা লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাঁকে ভাল ভাবে দেখতে না পেয়ে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন দর্শকেরা। মেসি মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু করে দেন ভাঙচুর। তাঁদের অভিযোগ, মাঠে মেসি যত ক্ষণ ছিলেন, তত ক্ষণ তাঁর গায়ের সঙ্গে সেঁটে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তার পর থেকেই ফুটবলপ্রেমী জনতার কাঠগড়ায় অরূপ। দিন যত গড়িয়েছে, ততই মোবাইলে মোবাইলে ঘুরতে শুরু করে মেসির গায়ে লেপ্টে-থাকা অরূপের ছবি। যুবভারতীয় গ্যালারি ছাড়িয়ে দলের অন্দরেও সমালোচিত হতে শুরু করেন অরূপ। তখন থেকেই প্রশাসনের অন্দরে জল্পনা তৈরি হয়, অরূপকে কি তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, অরূপ কি পদত্যাগ করবেন? অরূপের ঘনিষ্ঠদের অনুমান ছিল, মঙ্গলবার এসআইআর-এর খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে যুবভারতীকাণ্ড চাপা পড়ে যাবে। আলোচনার অভিমুখ হয়ে উঠবে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া। কিন্তু দেখা গেল আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচন কমিশন খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই মমতাকে চিঠি লিখে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিতে চান অরূপ। সেই ইস্তফা গৃহীত হল মঙ্গলবার।

অন্য দিকে, যুবভারতীকাণ্ডে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই কমিটি সোমবার রাতে নবান্নে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করে। সেই সঙ্গে প্রাথমিক সুপারিশও করে। তার পরের দিনই যুবভারতীকাণ্ডে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তা, অর্থাৎ ডিজিপি রাজীব কুমারকে শো কজ় করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমারকেও শো কজ় করা হয়েছে। শনিবার ফুটবল তারকা লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠানে কেন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তার জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে তাঁদের। পাশাপাশি, বিধাননগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত যত দিন চলবে, তত দিন নিলম্বিত (সাসপেন্ড) থাকবেন তিনি। ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিংহকেও শো কজ় করা হয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেবকুমার নন্দনকেও অপসারণ করা হয়েছে পদ থেকে। মুখ্যসচিব মনোজের দফতরের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে এই নির্দেশ জানানো হয়। কমিটির সুপারিশ মেনে এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করা হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন