—প্রতীকী চিত্র।
কন্যা সন্তানের ‘সখ’ পূরণ করতে ১২ দিনের এক শিশুকে দত্তক নিয়ে ছিলেন এক দম্পতি। কিন্তু সথিক নিয়ম না মানায় ওই শিশুকে তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চাইল্ড হেল্পলাইন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের দাসপুরের বৈকুন্ঠপুর থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হল। উপস্থিত ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড হেল্পলাইন ও প্রোটেকশন ইউনিটের কাউন্সিলর, দাসপুর থানার পুলিশ ও দাসপুর-১ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর, পুলিশ চাইল্ড হেল্পলাইনের হাতে তুলে দেয়। এর পর ওই শিশুটিকে পূর্ব মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পূর্ব যোগাযোগ সূত্রে ১২ দিনের এই কন্যা শিশুটির সন্ধান পান দাসপুরের পাইন দম্পতি। তাঁদের দু’টি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাই পাইন দম্পতির ইচ্ছা ছিল কন্যা সন্তানের। তাঁরা একটি পরিবারের কাছ থেকে ওই বাচ্চাটিকে নেন। দম্পতির দাবি, ওই পরিবারে তিনটি কন্যা সন্তান ছিল। তারা পুত্র সন্তান চেয়েছিল। কিন্তু তাদের কন্যা সন্তান হয়। তাই ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা ওই শিশুটিকে নিজেদের কাছে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরেই খবর পৌঁছোতে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চাইল্ড হেল্পলাইন। এ দিন ওই কন্যা সন্তানকে পেয়েও তাকে হাতছাড়া করে কান্নায় ভেঙে পড়েন পাইন দম্পতি।
চাইল্ড হেল্পলাইন ও প্রোটেকশন ইউনিটের কাউন্সিলর শেখ আজিজুল রহমান বলেন, “আমাদের কাছে ফোন আসে দাসপুর-১ ব্লকে এক ব্যক্তি অন্যকোথাও থেকে একটি ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসে লালনপালন করছেন। থানা ও ব্লক খবর পেয়ে যৌথ ভাবে উদ্ধার করে ওই শিশুটিকে। আমরা জানতে পেরেছি ওই বাচ্চাটিকে ওঁরা বেনিয়মে রেখেছেন।” আজিজুল জানান, একটা বাচ্চাকে রাখতে গেলে সরকারি যে নিয়মাবলী রয়েছে, সেই নিয়ম অনুযায়ী কারাপোর্টাল অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি পোর্টালে আবেদনের ভিত্তিতেই কেউ বাচ্চাকে দত্তক নিতে পারেন। চাইল্ডলাইলের তরফে জানানো হয়, সরকারি যে হোম রয়েছে সেখানেই ওই শিশুটিকে রাখা হবে।
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ কুমার দাস বলেন, “আমাদের কাছে এ বিষয়ে ফোন আসে। আমরা আমাদের লোক পাঠিয়ে শিশুটিকে নিয়ম মেনে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। শিশুটিকে সরকারি একটি হোমে রাখা হবে।” কোথা থেকে কী ভাবে শিশুটি দাসপুরের পাইন দম্পত্তির কাছে ওই শিশুটির খবর এসেছে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক। তিনি বলেন, “শিশুটি উদ্ধার করা আমাদের প্রথম কাজ। তারপর পরবর্তী তদন্ত আমরা শুরু করব। এখনই সব বলা সম্ভব না।”