Pull Car

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে পুলকার হিসাবে! হাওড়ায় দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর পর উঠে আসছে এমনই তথ্য, সতর্ক প্রশাসন

জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ২০০৩ সালের গাড়িটির ফিটনেস সার্টিফিকেট (সিএফ) ছিল না। বাণিজ্যিক গাড়ি হিসাবে অনুমোদনও ছিল না হাওড়া আরটিএ-র কাছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৪
After the childrens death in the pool car accident, reports are emerging about the widespread use of private cars as pool cars

উলুবেড়িয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যাওয়া সেই পুলকার। —ফাইল চিত্র।

উলুবেড়িয়ার বহিরা গ্রামে পুলকার দুর্ঘটনায় তিন খুদে পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যে। দুর্ঘটনার তদন্তে একের পর এক বেআইনি দিক প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী এবং অভিভাবকেরা। পুলকার সংগঠনগুলির দাবি, ব্যক্তিগত গাড়িকে বেআইনি ভাবে পুলকার পরিষেবায় নামানোর প্রবণতাই এই বিপদের মূল কারণ।

Advertisement

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির ফিটনেস সার্টিফিকেট (সিএফ) ছিল না। বাণিজ্যিক গাড়ি হিসাবে অনুমোদনও ছিল না হাওড়া আরটিএর কাছে। তবু সেটিতে স্কুলের বাচ্চাদের আনা-নেওয়া চলছিল নিয়ম ভেঙেই। পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতা সুদীপ দত্ত বলেন, “বাণিজ্যিক গাড়ি ব্যতীত কোনও গাড়িকেই আমরা সংগঠনে যুক্ত করি না। ব্যক্তিগত গাড়ি পুলকার পরিষেবায় যুক্ত হওয়াই বড় বিপদের কারণ। স্বল্প লাভের জন্য যে ক্ষতি হল, তা কোনওভাবেই পূরণ হওয়ার নয়।” তিনি আরও বলেন, “এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের যেমন সচেতন ভাবে কাজ করা উচিত, তেমনই অভিভাবকদেরও উচিত, যে গাড়িতে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো হচ্ছে, সেই গাড়ি প্রসঙ্গে খোঁজখবর রাখা। কারণ, এখন তো গাড়ির নম্বর দিলেই ইন্টারনেটে সব তথ্য পাওয়া সম্ভব।”

তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানায়, গাড়িচালকের কয়েক মাস আগেই হৃদ্‌যন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। চিকিৎসকের ছ’মাস বিশ্রামের পরামর্শ অমান্য করেই তিনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। সে দিন তাঁর নিজের পুলকার নয়, বন্ধুর গাড়ি চালিয়ে স্কুলে গিয়েছিলেন পড়ুয়াদের আনতে। এ সব তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই অভিভাবকেরা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। অভিভাবকদের অভিযোগের পর কড়া পদক্ষেপ করেছে উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসন এবং হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। বুধবার মহকুমাশাসক মানসকুমার মণ্ডলের দফতরে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে জারি করা হয়েছে নতুন নির্দেশিকা। প্রশাসনের নির্দেশ— প্রতিটি স্কুলকে ব্যবহৃত পুলকারের যাবতীয় তথ্য জমা দিতে হবে। এর মধ্যে থাকবে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, সেটি ব্যক্তিগত না কি বাণিজ্যিক গাড়ি, মালিকের ফোন নম্বর, চালকের নাম, লাইসেন্স, মোবাইল নম্বর, হেল্পারের পরিচয়-সহ সব তথ্য। প্রতিটি স্কুলকে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সব পুলকারে লোকেশন ট্র্যাকার বসাতে হবে।

প্রশাসনের পরামর্শ, শুধু স্কুল নয়, অভিভাবকদেরও সতর্ক হতে হবে। কোন গাড়িতে তাঁদের সন্তানরা যাতায়াত করছে, সেটি বৈধ ও নিরাপদ কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে সকলে মিলে।

Advertisement
আরও পড়ুন