কাঁকসায় রাজ্য সড়ক অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
ন্যায্য বেতন, বকেয়া উৎসাহ ভাতা মেটানো-সহ একগুচ্ছ দাবিতে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আশা কর্মীরা। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিম বর্ধমান জেলাও। বুধবার আসানসোল, অন্ডাল, কুলটি, রানিগঞ্জে বিক্ষোভের পাশাপাশি কাঁকসায় রাজ্য সড়কে অবরোধ হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পুর কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
‘পশ্চিমবঙ্গ পুরস্বাস্থ্য কর্মী কন্ট্রাকচুয়াল ইউনিয়ন’-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি উদ্যোগে মঙ্গলবার থেকে আরবান আশা কর্মীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এ দিন আসানসোল পুরসভার সামনে এবং বুধবার সুকান্ত ময়দান সংলগ্ন হেলথ অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন আশা কর্মীরা। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার।
তাঁদের মূল দাবি, সরকারি স্বীকৃতি, ন্যূনতম মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বকেয়া উৎসাহ ভাতা মেটানো। এই সব দাবিতে এ দিন প্রায় আধ ঘণ্টা কাঁকসায় পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে হাসপাতাল মোড়ের কাছে অবরোধ-বিক্ষোভ হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। আশা কর্মী জয়া দাস ধরের কথায়, “আমাদের এখন বেতন দেওয়া হয় ৫,২৫০ টাকা। অথচ কাজের চাপ বেড়েই চলেছে। মেলা থেকে খেলা, প্রতিটি জায়গাতেই আশা কর্মীদের কাজে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের মাসে সর্বনিম্ন ১৫০০০ টাকা বেতনের প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে পরিচিতি দিতে হবে। তা না হলে এই কর্মবিরতি চলবে।” আসানসোলে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া আশা কর্মী তবাসুম আরা বলেন, “এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে এই টাকায় কী হয়! উৎসাহ ভাতা তিন-চার মাস বকেয়া পড়ে। আমরা কী করে সংসার চালাব! আমাদের সমস্ত দাবি মানতে হবে।”
এ দিন ‘আশা কর্মী ইউনিয়নের’ নেতৃত্বে খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিএমওএইচ-এর কার্যালয়ের সামনে, রানিগঞ্জে আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, কুলটির মেনধেমোয় আসানসোল পুরসভার ‘আরবান পাবলিক হেলথ সেন্টারে (ইউপিএইচসি) পুর স্বাস্থ্যকর্মী (চুক্তিভিত্তিক) ইউনিয়নের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। সংগঠনের নেতৃত্বরা জানান, প্রতি মাসে তাঁদের দু’শো টাকা করে মোবাইল ফোনের জন্য দেওয়ার কথা। কিন্তু জুন পর্যন্ত মাসিক ১০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এই টাকাও বাকি রয়েছে। বিক্ষোভকরীদের অভিযোগ, তাঁরা বিভিন্ন দফতরে দীর্ঘদিন ধরে এই সব দাবি জানিয়ে আসছেন। শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। অথচ করোনা, ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন সঙ্কটের সময়ে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে গিয়েছেন তাঁরা। আশা কর্মী মঞ্জু চক্রবর্তী বলেন, “দাবি না মানলে কর্মবিরতি চলবে।”
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “তাঁদের যা দাবি আছে, রাজ্য স্বাস্থ্যভবনে জানানো হয়েছে।”