আতঙ্কে ঘর ছাড়ছেন এক বধূ। —নিজস্ব ছবি।
শীতের ভোরে বিকট শব্দ পেয়ে চমকে গিয়েছিলেন সকলে। ঘুমচোখে বাড়ি থেকে বেরিয়েই চোখ কপালে বাসিন্দাদের। কনকনে ঠান্ডায় আতঙ্কে কাঁপুনি শুরু হয়েছে তাঁদের। রবিবার পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের খাস কাজোড়ার পিডি এলাকায় আবার শুরু হয়েছে ধস। বাড়িতে ফাটল দেখা যাচ্ছে। আঙুল উঠল ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের (ইসিএল) দিকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রবিবার সকালে বোমা ফাটার মতো শব্দ হয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন বসতি এলাকার ঠিক পাশেই ফাঁকা জমিতে ধস নেমেছে। প্রায় ২০০ ফুট গভীর এবং ২০০ ফুট চওড়া আকার নিয়ে ফাটল দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলতে। ওই এলাকায় আছেন ইসিএলের কর্মীদের আবাসনও।
ওই খবর পাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে গোটা এলাকা ‘বিপজ্জনক’ লেখা কার্ডেন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে যান জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি বিষ্ণুদেও নুনিয়া। তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, দু’-তিন মাস আগেও সরষডাঙা এলাকায় ধস নেমেছিল। সেখানে প্রায় ৮-১০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দু’-তিনটি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। ইসিএল কর্তৃপক্ষকে স্থায়ী সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করতে বলে আবেদন করা হয়। কিন্তু তাঁরা কোনও কাজ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আজ থেকে এক সপ্তাহ আগে আবার ধস নেমেছিল। এ বার এই এলাকায় হল। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তদন্ত করে দেখা হোক। তার পর কী ভাবে এই সমস্যা আটকানো যায়, তার তদন্ত হোক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেউ ১০০ বছর, কেউ ৫০-৬০ বছর ধরে এই এলাকায় বাস করছেন। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যাম দেও বলেন, ‘‘এ ভাবে ধস নামতে থাকলে আমাদের প্রাণসংশয় হতে পারে। ৩০ বছর ধরে এই এলাকায় রয়েছি। কিন্তু এখন আমরা কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।’’ তবে এ বিষয়ে ইসিএলের কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।