কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সংসদে দাঁড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি ভুল করে বসলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মোদীর পরিবর্তে ‘নরেন্দ্র বাজপেয়ী’ বলে ফেলেছিলেন তিনি। পরক্ষণেই অবশ্য তা সংশোধন করেছেন এবং সঠিক নামটি বলেছেন। তবে কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের সাংসদের এমন ভুল বিজেপিকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলও।
লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন চলছে। বুধবার সেখানেই বক্তৃতা করছিলেন অভিজিৎ। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে এখন এক জন প্রধানমন্ত্রী আছেন, তাঁর নাম নরেন্দ্র বাজপেয়ী।’’ সামান্য থেমেই ভুল সংশোধন করে নেন তিনি। মাথা নেড়ে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী। আর এক জন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, তাঁর নাম অমিত শাহ। তাঁদের নাম শুনলেই আপনারা কাঁপতে শুরু করেন।’’ অভিজিতের বক্তব্যের এই অংশটুকুর ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা ভাষণের ত্রুটি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। গত সোমবার বন্দে মাতরম প্রসঙ্গে বক্তৃতা দিয়ে মোদী সংসদের অধিবেশন শুরু করেছিলেন। ‘বন্দে মাতরম’ গানের রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তিনি। পরে ত্রুটি সংশোধন করে নিলেও তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্রকে অপমানের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, এই ভুলের জন্য নাকখত দেওয়া দরকার। অভিজিতের ভুল প্রসঙ্গে তৃণমূল আবার প্রধানমন্ত্রীর সেই ত্রুটিকেই টেনে এনেছে। দলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দিনের শেষে রক্তে বাঙালি তো, তাই বঙ্কিমচন্দ্রের অপমান মেনে নেবে না। প্রতিবাদে ওই সংসদে দাঁড়িয়েই সদর্পে ভগবানদা আজ প্রধানমন্ত্রীর পদবিটাই বদলে দিলেন।’’
অভিজিৎ নিজে কী বলছেন? বুধবার রাতে আনন্দবাজার ডট কম-এর তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তমলুকের সাংসদ ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘প্রথমে বলতে গিয়ে ভুল হয়ে গিয়েছিল। পরে সংশোধন করে সঠিক বলেছি।’’
রাজ্য বিজেপিও এই ভুলকে পাত্তা দিতে নারাজ। বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কথা বলতে গিয়ে ভুল হলে পরক্ষণেই যদি কেউ সংশোধন করে নেন, তা হলে আর কী বলার থাকতে পারে?’’ এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের ভুলের উদাহরণ টেনেছেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীও তো ভাষণ দিতে গিয়ে অজস্র ভুল করেন। সম্প্রতি এক জায়গায় আবার ভুল নিজেই সংশোধন করেছেন এবং বলেছেন, যেহেতু তিনি সংশোধন করে নিয়েছেন, সেহেতু আর ওই বিষয়ে কিছু বলে যাবে না। তা অভিজিৎবাবু যখন সংশোধন করেই নিয়েছেন, তখন আবার এত কথার কী আছে?’’