OBC Certificate Case

ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলা: কেন আদালতের নির্দেশ মানা হল না? জবাব চেয়ে মুখ্যসচিবকে তলব হাই কোর্টের

বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজকে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ১৮:০৯
রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।

রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। — ফাইল চিত্র।

ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় এ বার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। অভিযোগ, আদালত শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করছে না রাজ্য। এর পরেই উচ্চ আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হাজিরা দিয়ে কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাও গ্রহণ করেছে উচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজকে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি। আগামী ১২ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। ওই দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজিরা দিতে পারবেন মুখ্যসচিব মনোজ।

উল্লেখ্য, গত বছর ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। উচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। ওই সব সার্টিফিকেট ভবিষ্যতে কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। তবে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত। সেখানে রাজ্যের মামলাটি এখন বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল নিয়ে হাই কোর্টের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ নেই। তা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ ইচ্ছাকৃত ভাবে পালন করছে না রাজ্য। অনেক জায়গায় নতুন করে ওই সার্টিফিকেটের ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ এর পরেই ব্যাখ্যা চেয়ে মনোজকে তলব করল উচ্চ আদালত।

হাই কোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ছাড়়াও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। গত ডিসেম্বরে ওই মামলার শুনানিতে মূল মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়া সওয়াল করে জানান, হাই কোর্ট রায়ে বলেছে ওবিসিদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও সমীক্ষা করা হয়নি। নির্দিষ্ট কোনও তথ্য ছাড়াই ‘ওবিসি’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কমিশনকে এড়িয়ে ওই কাজ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, রঙ্গনাথ কমিশনই মুসলিমদের সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। তাতেও হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। বরং শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে কারও সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়। বিচারপতি গবই প্রশ্ন তোলেন, হাই কোর্ট বলেছে শ্রেণিবিন্যাস করে রাজ্য বিধানসভায় পেশ করুক। রাজ্য কেন নিজের ক্ষমতায় তা করতে পারবে না? এর পরেই দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এর পর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে একাধিক বার ওই মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে শীর্ষ আদালতে। মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলার শুনানি হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন