Working Women's Safety

কর্মরত মহিলাদের রাতের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে, রাজ্যকে ‘টিম’ গঠনের নির্দেশ হাই কোর্টের

কর্মরত মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। আদালত জানায়, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে একটি ‘টিম’ গঠন করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৯
রাতে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল আরজি করের ঘটনার পর থেকেই।

রাতে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল আরজি করের ঘটনার পর থেকেই। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্যকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সরকারি এবং বেসরকারি, উভয় ক্ষেত্রেই কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বলেছে আদালত। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে এ বিষয়ে একটি ‘টিম’ গঠন করতে বলা হয়েছে। কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবে। বিশেষত রাতে যে মহিলারা কাজ করেন, তাঁদের নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিতে বলেছে হাই কোর্ট। নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনার পর একটি খসড়া নোটিস তৈরি করবে স্বরাষ্ট্র দফতরের ওই ‘টিম’। সেই অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে পদক্ষেপ করতে হবে।

Advertisement

কর্মরত মহিলাদের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারী জানিয়েছিলেন, বহু বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ২৪ ঘণ্টা কাজ চলে। সেখানকার মহিলা কর্মীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা দরকার। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন মামলাকারী। এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে ‘রাত্রিসাথী’ প্রকল্পের কথা বলা হয় আদালতে। তারা জানায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাতে নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় সারা রাত পুলিশ মোতায়েন থাকে। এর পরেও মামলাকারী যদি অতিরিক্ত কোনও নিরাপত্তা দাবি করেন, তা লিখিত ভাবে সরকারকে জানাতে হবে। সরকার সেটা বিবেচনা করে দেখবে।

কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সরকারি ওই প্রকল্প ছাড়াও রাতে মহিলাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে একটি ‘টিম’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই টিমের সদস্যেরা দেখবেন, কোথায় কী ধরনের নিরপত্তার বন্দোবস্ত রয়েছে, কোথায় আরও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজন, কোথায় রয়েছে খামতি। সব দিক খতিয়ে দেখে স্বরাষ্ট্র দফতরের ওই ‘টিম’ একটি খসড়া নোটিস তৈরি করবে এবং তা দেওয়া হবে দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।

উল্লেখ্য, কর্মরত মহিলাদের রাতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আরজি করের ঘটনায়। হাসপাতালের মধ্যে কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণ এবং খুন করা হয় মহিলা চিকিৎসককে। সেই ঘটনায় বিচারের দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। আরজি কর-কাণ্ডের পর মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে ১৭ দফা নির্দেশিকা দিয়েছিল নবান্ন। সেখানে বলা হয়েছিল, সম্ভব হলে মহিলাদের রাতের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। সরকারের এই নির্দেশিকা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে। নির্দেশিকার সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টও। তার পর ওই নির্দেশিকা নবান্ন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এ বার এই সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় রাজ্যকে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টি দেখতে ‘টিম’ গঠনের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।

Advertisement
আরও পড়ুন