কলকাতা হাই কোর্টে সপরিবার স্বস্তি পেলেন শিল্পপতি পবনকুমার রুইয়া। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
৩১৫ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা মামলায় নাম জড়িয়েছিল শিল্পপতি পবনকুমার রুইয়া এবং তাঁর পরিবারের। সেই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পবন। তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করল উচ্চ আদালত। তবে বেঁধে দিয়েছে শর্ত।
পবনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগ। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করেছিল পুলিশ। তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে যান পবন। আদালতে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জামিনের বিরোধিতা করে রাজ্য। সরকারি আইনজীবীর সওয়াল, অভিযুক্তেরা তদন্তে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক নন। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন।
রাজ্যের আরও বক্তব্য, পবনেরা শিল্পপতি হিসাবে দাবি করলেও তাঁদের কী অবদান রয়েছে? রাজ্যের কাছ থেকে ডানলপ-জেসপ কারখানা নিয়ে যন্ত্রপাতি বিক্রি করে দিচ্ছিলেন। শেষমেশ রাজ্যকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তাঁদের সকলকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। মামলাকারীদের আইনজীবীদের পাল্টা বক্তব্য, এই শিল্পপতিদের তিন পুরুষ এ রাজ্যে বাস করেন। তাঁদের সব ব্যবসা আইনসিদ্ধ। শর্তসাপেক্ষে হলেও পবনদের আগাম জামিন মঞ্জুর করা হোক, আবেদন মামলাকারীদের আইনজীবীর। এই সাইবার মামলার তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, প্রয়োজনে তদন্তের ভার নিক সিবিআই।
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে হাই কোর্ট পবনদের আগাম জামিন মঞ্জুর করে। শর্ত হিসাবে হাই কোর্ট জানিয়েছে, জেলা আদালতে তাঁদের পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। পবন ছাড়াও এই মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর পুত্র রাঘব রুইয়া এবং কন্যা পল্লবীর।
পুলিশ জানিয়েছিল, প্রতারণার বিপুল পরিমাণ টাকা পবনকুমার ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জড়িত একাধিক সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল’ (এনসিআরপি)-র তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, দেশ জুড়ে প্রায় ১,৩৭৯টি অনলাইন প্রতারণার ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে ওই ব্যবসায়ীর। এর পরেই পবনদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। পবন ও তাঁর সহযোগীদের বাড়ি ও অফিসে দফায় দফায় তল্লাশি চালানো হয়। তদন্তকারীদের দাবি, পবন ও তাঁর পরিজনদের নামে অন্তত ১৪৮টি ভুয়ো সংস্থা (শেল কোম্পানি) রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সে সব সংস্থার অ্যাকাউন্টেই জমা রাখা হত সাইবার প্রতারণার টাকা।