West Bengal Congress

একা লড়াই না বাম-সঙ্গ, জেলার মত চাইল কংগ্রেস

সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির রাজনৈতিক সচিব মারফত দলের ২৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতিদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জোট বেঁধে লড়ার পরে এখনও কোনও পদক্ষেপ হয়নি সিপিএমের তরফে। তবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতির গতি বাড়াল কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস একা লড়বে, নাকি বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট করেই এগোনো হবে, সেই ব্যাপারে মতামত চেয়ে পাঠানো হল দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে। জেলায় জেলায় বিধানসভা আসনগুলিকে সম্ভাবনার নিরিখে তিন ভাগে ভাগ করে নেওয়ার জন্যও জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ পাঠানো হল প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে।

সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির রাজনৈতিক সচিব মারফত দলের ২৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতিদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে তিনটি প্রশ্নে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সভাপতিদের দ্রুত মত জানাতে বলা হয়েছে। প্রথমত, আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে কি না। দ্বিতীয়ত, একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না-করলে বামফ্রন্টের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করা হবে কি না। এবং তৃতীয়ত, দলের সম্ভাবনা বিচার করে জেলার বিধানসভা কেন্দ্রগুলিকে ‘এ’, ‘বি’ এবং ’সি’— এই তিন ভাগে কী ভাবে ভাগ করা যায়, জানাতে হবে। একা লড়া বা বামফ্রন্টের হাত ধরার প্রসঙ্গে জেলা নেতৃত্বের মতামত চাওয়া হলেও প্রদেশ কংগ্রেসের চিঠিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন রাখা হয়নি। বাংলায় কংগ্রেসের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনার মধ্যে এই বার্তা ইঙ্গিতবাহী বলেই দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা।

লোকসভা নির্বাচনের পরে গত বছর জুন মাসে চারটি এবং নভেম্বরে ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছিল। তার মাঝেই প্রদেশ কংগ্রেসে সভাপতি পরিবর্তন হয়েছিল। আগের ৬টি উপনির্বাচনের পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রদেশ কংগ্রেসে এলেও কালীগঞ্জের ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘আগের উপনির্বাচনগুলির পরে সাংগঠনিক দুর্বলতা আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। কালীগঞ্জের পরে জেলা ও ব্লকের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। প্রার্থী নিয়ে সমস্যা বা অন্য কোনও বিষয় যেখানে যা হয়েছে, সবটাই দলের মধ্যে আলোচ্য।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘জেলা সভাপতিদের বক্তব্য পেলে আমরা সে সব সঙ্কলন করে প্রদেশে রিপোর্ট তৈরি করি। তবে বিধানসভা নির্বাচনের কৌশলের বিষয়ে এআইসিসি-র মত নিয়ে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’

এর আগে দিল্লিতে জেলা সভাপতিদের বৈঠকে ডেকেছিল এআইসিসি। কংগ্রেসের এক জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘এআইসিসি-র তরফে বলা হয়েছিল, সাংগঠনিক বিষয় ও নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ব্লক স্তরের সঙ্গে কথা বলে জেলা নেতৃত্ব মতামত দেবেন, সেই মতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে জেলা নেতৃত্বকে তাঁদের সিদ্ধান্তের জন্য দায়িত্বও নিতে হবে।’’ পরিস্থিতির বিচার করে তাঁদের মতামত এখন প্রদেশ নেতৃত্বকে জানাবেন জেলা সভাপতিরা।

আর এমতাবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসককে বিঁধে বামফ্রন্টের বাইরের বাম ও গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে একজোট করার ডাকই দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দুই সরকার মিলে মানুষকে অধিকার তো দিচ্ছেই না। উল্টে অধিকার সঙ্কুচিত করেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা আন্দোলন-সংগ্রামকে আরও তীব্র করছি। সামনের তিন মাস ধরে গোটা রাজ্যে এ সবের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। আগামী নির্বাচনে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই হবে আমাদের লক্ষ্য।’’

আরও পড়ুন