Cyclone in Bay of Bengal

রাতেই তৈরি হল ঘূর্ণিঝড় মোন্থা, ১৩ কিমি বেগে ধেয়ে যাচ্ছে উপকূলের দিকে! ঝোড়ো হাওয়া বইবে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায়

দক্ষিণ-পূর্ব এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যে গভীর নিম্নচাপটি ছিল, তা গত ছ’ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:২৪
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে রবিবার রাতে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা।

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে রবিবার রাতে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা। —ফাইল চিত্র।

বঙ্গোপসাগরে রবিবার রাতেই তৈরি হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা। ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে তা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই কমবেশি সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সতর্কতা রয়েছে কলকাতার জন্যেও।

Advertisement

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যে গভীর নিম্নচাপটি ছিল, তা গত ছ’ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা। আপাতত তা চেন্নাই থেকে ৬৪০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব, কাকিনাড়া থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৭৪০ কিলোমিটার পশ্চিম, বিশাখাপত্তনম থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব এবং গোপালপুর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে অবস্থান করছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝ়ড়ের শক্তি বাড়বে। তা ক্রমশ উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে এবং ২৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার সকালের মধ্যে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হবে। ‘প্রবল’ আকারেই মঙ্গলবার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম এবং কাকিনাড়ার কাছে কলিঙ্গপত্তনম উপকূলের মধ্যবর্তী অংশে আছড়ে পড়বে। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার বেগ ছুঁতে পারে ১১০ কিলোমিটারের গণ্ডিও।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টি চলতে পারে। চার দিনের বিস্তারিত পূর্বাভাস—

মঙ্গলবার: দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে।

বুধবার: ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়ায়। সেই সঙ্গে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

বৃহস্পতিবার: পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা রয়েছে।

শুক্রবার: বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা। এ ছাড়া, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা রয়েছে দুই বর্ধমান, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনায়।

উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবার থেকে মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর এবং মালদহে। শুক্রবার দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারেও বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্র এখন উত্তাল। তাই মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা গিয়েছেন, সোমবারের মধ্যে তাঁদের ফিরে আসতে বলা হয়েছে।

সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি। রবিবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৩২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৮ ডিগ্রি বেশি।

Advertisement
আরও পড়ুন