ভোটারের হাতে এনুমারেশন ফর্ম তুলে দিচ্ছেন এক বিএলও। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) শুনানির জন্য ভোটারদের নোটিস পাঠানো শুরু করার কথা ছিল বৃহস্পতিবার থেকে। কিন্তু তা এখনও শুরু করা যায়নি। বিশেষ কিছু কারণে এখনও প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকেই ভোটারদের নোটিস পাঠানো শুরু হয়ে যাবে। অনেকেই শুক্রবার নোটিস হাতে পাবেন।
রাজ্যে ৪ নভেম্বর থেকে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এনুমারেশন ফর্ম সংগ্রহ এবং কমিশনের পোর্টালে তা আপলোড করার কাজ চলেছে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তার পর ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। বাদ পড়েছে ৫৮ লক্ষের বেশি ভোটারের নাম। কমিশন জানিয়েছিল, খসড়া তালিকা প্রকাশের পরেই ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য শুনানিতে ডাকা হবে। এই প্রক্রিয়াই বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল পশ্চিমবঙ্গে। কমিশন সূত্রে খবর, শুনানির নোটিস তৈরি আছে। কিন্তু তা ইংরেজিতে। ইংরেজি নোটিসে কারও কারও সমস্যা হতে পারে। তাই নোটিসগুলি আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদের কাজ চলছে। সেই কারণেই এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে অনুবাদের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের খসড়া তালিকায় প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ রয়েছেন ‘নো ম্যাপিং’ হিসাবে। কমিশন সূত্রে খবর, যাঁরা ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে নিজের কোনও যোগ দেখাতে পারেননি, তাঁরা ‘নো ম্যাপিং’ তালিকাভুক্ত। তাঁদের প্রত্যেককেই শুনানির জন্য ডাকবে কমিশন। এ ছাড়াও আরও ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোটার রয়েছেন, যাঁদের কমিশন সন্দেহজনক হিসাবে চিহ্নিত করেছে। লিঙ্গ, নাম কিংবা বয়সের গরমিল সন্দেহের অন্যতম কারণ। শুনানিতে তাঁরাও ডাক পাবেন। আপাতত শুক্রবার থেকে ‘নো ম্যাপিং’ তালিকাভুক্তদের ডাকা শুরু করবে কমিশন।
অভিযোগ, অনেক জায়গায় বুথ স্তরের আধিকারিকেরা (বিএলও) এখনও পারিশ্রমিক পাননি। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে বিএলও-দের পারিশ্রমিক মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিইও-দের।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকে এখনও পর্যন্ত কমিশনের কাছে ৭০ থেকে ৭৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে পাঁচ-সাতটি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। লিখিত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছে কমিশন।
অতিরিক্ত আরও ২৮০০ জন সহকারী ইলেক্টোরাল রোল অফিসার (এইআরও) নিয়োগ করতে চেয়ে রাজ্যের কাছে অফিসার চেয়েছিল কমিশন। রাজ্যের তরফে অফিসার পাঠানো শুরু হয়েছে। শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হলে এই অফিসারদের কাজে লাগানো হতে পারে। এর আগে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে ২৯৪ জন ইআরও এবং ৩০৫৯ জন এইআরও নিয়োগ করা হয়েছিল।
প্রায়ই রাজ্যের সিইও দফতরে ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস থেকে বিদেশি নাগরিকদের অবৈধ ভোটার কার্ড বাতিলের সুপারিশ আসছে। কমিশন জানিয়েছে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে এমন সুপারিশ পাওয়া গেলে তা ইআরও-র গাফিলতি হিসাবে ধরা হতে পারে। তখন ভোটার তালিকায় অবৈধ ভোটার থাকলে শাস্তির মুখে পড়বেন সংশ্লিষ্ট ইআরও।