—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শিক্ষার শংসাপত্র এবং শুনানির কেন্দ্র— এই জোড়া বিষয়ে জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্ক করল নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, এই দুই বিষয়ে কমিশনের নিয়ম স্থানীয় স্তরে বদলানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। অভিযোগ, শুনানির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ‘ভুল’ বার্তা দেওয়া হচ্ছিল। জেলা প্রশাসনগুলিকে তাই সতর্ক করতে হয়েছে।
কমিশনের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনও বোর্ড (মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পর্ষদ) বা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে যখন-তখন শংসাপত্র বার করে নেওয়া সম্ভব নয়। অথচ স্কুল স্তরে সাধারণ শংসাপত্র বার করে ফেলা কঠিন নয় একেবারেই। একাধিক জেলা থেকে অভিযোগ, চতুর্থ, পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণির নথি দেখিয়েও তা শুনানির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) সরকারী বা এইআরও-দের গ্রাহ্য করতে বলা হচ্ছে।
কমিশন তাদের এসআইআর-আদেশনামায় জানিয়েছিল, শুনানিতে ডাক পাওয়া ভোটারেরা নথিবদ্ধ ১৩টি নথির মধ্যে স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার শংসাপত্র দাখিল করতে পারবেন। ইতিমধ্যেই শুনানির নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুনানির কাজ শুরু করবে কমিশন। এই আবহে স্কুলের নিচু ক্লাসের নথির বিষয়ে কমিশনের তরফে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনার একাংশ-সহ একাধিক জেলা থেকে জেলা প্রশাসনের নিচুতলার আধিকারিকদের অনেকেই সরাসরি কমিশনকে শিক্ষা শংসাপত্র নিয়ে নানা প্রশ্ন করা হয়েছে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে, কমিশনের স্থির করে দেওয়া বিধির বাইরে কোনও শিক্ষা-শংসাপত্র গ্রাহ্য করা যাবে না। এক কর্তার কথায়, “বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসাধু উপায়ে শংসাপত্র পাওয়া মুশকিল। কারণ, তাদের অনেক ধরনের বিধি মেনে চলতে হয়। তাই সেই শংসাপত্রগুলিকেই মানতে বলা হয়েছে। কিন্তু চতুর্থ, পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণির শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষমতা থাকে স্কুলের উপরেই। অসাধু ভাবে তা বের করা অসম্ভব নয়। আবার রাজনৈতিক কোনও চাপ থাকলে সে কাজ আরও সহজ। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
কমিশন জানিয়েছিল, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক (এসডিও) বা বিডিও অফিসে শুনানির কাজ হবে। সেখানে জায়গা কম থাকলে আশপাশের সরকারি কোনও দফতরে শুনানির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যায় শুনানির নোটিসে শুনানি কেন্দ্র লেখায় মুশকিল হচ্ছিল। তাই জেলা কর্তাদের প্রাথমিক ভাবে বলে দেওয়া হয়েছিল, শুনানির নোটিসের উপরে কোথায় শুনানি হবে, তা হাতে লিখে দেওয়া হোক। একাধিক জেলা থেকে কমিশনের কাছে অভিযোগ পৌঁছেছে— পঞ্চায়েত অফিসগুলিকেও শুনানি-কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করার ‘চাপ’ তৈরি হচ্ছে। এর পিছনে রাজনৈতিক যোগও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই কমিশন জেলাশাসকদের জানিয়েছে, কোনও ভাবেই বিডিও অফিসের নীচের স্তরে শুনানির কেন্দ্র তৈরি করা যাবে না। অর্থাৎ, পঞ্চায়েত অফিসে শুনানি কেন্দ্র যে করা যাবে না, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই মাইক্রো অবজ়ার্ভার নিয়োগের ব্যাপারেচূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে সিইও দফতর। সব ঠিক থাকলে আজ, সোমবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলির পদস্থ আধিকারিকদের নিয়োগপত্র দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তার পরেই শুরু হবে প্রশিক্ষণ। শুনানির প্রথম দিন থেকেই প্রতিটি শুনানি কেন্দ্রের নজরদারিতেথাকবেন তাঁরা।