(বাঁ দিক থেকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
বহুদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে জাপান সফরে গিয়ে টোকিয়োতে প্রয়াত প্রাক্তন বিচারপতি রাধাবিনোদ পালের স্মৃতিস্তম্ভে শুক্রবার শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের এই ভূমিকায় খুশি রাধাবিনোদের পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম। রাধাবিনোদের পৌত্র সুধীবিনোদ পাল সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, ২০২৪ সালে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাধাবিনোদের নামে উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিট সংলগ্ন কোনও একটি রাস্তার নামকরণ হবে। কিন্তু এখনও তা হয়নি। সূত্রের খবর, বিষয়টি অভিষেকের গোচরে এসেছে। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছেন, বিদেশ সফর থেকে কলকাতায় ফিরেই তিনি এই বিষয়ে রাধাবিনোদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। একই সঙ্গে প্রতিশ্রুতিপূরণের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মধ্যেও সমন্বয় করবেন।
গত বছর রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই রাধাবিনোদের স্মৃতিতে একটি কনক্লেভ হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠান থেকেই রাস্তার নামকরণের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতির পৌত্র। জাপানে গিয়ে অভিষেক শ্রদ্ধা জানানোর পরে পুরনো বিষয়টি নতুন করে উত্থাপন করেছেন সুধীবিনোদ। তিনি একটি বহুজাতিক সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত। রাজ্য সরকার এবং কলকাতা কর্পোরেশনের উদ্দেশে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, রাস্তার নামকরণ যাতে দ্রুততার সঙ্গে করা হয়।
রাধাবিনোদ ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের আইন কমিশনের সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ‘টোকিয়ো ট্রায়াল’-এর অন্যতম বিচারপতি ছিলেন তিনি। রাধাবিনোদই ছিলেন টোকিয়ো ট্রায়ালের একমাত্র বিচারপতি, যিনি তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন যুদ্ধপরাধে অভিযুক্ত সকলেই দোষী নন। যে কারণে জাপানে রাধাবিনোদকে ভিন্ন চোখে দেখা হয়।
সন্ত্রাসবাদের নেপথ্যে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সারা দুনিয়াকে জানাতে ভারত থেকে সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল দেশে দেশে ঘুরছে। তারই একটি দলের সদস্য হিসাবে অভিষেক গিয়েছেন জাপানে। এর পর যাবেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরে। শনিবার জাপানে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি বিরোধী দলের সাংসদ। কিন্তু দেশের বিষয়ে ভারত ঐক্যবদ্ধ।’’ সন্ত্রাসবাদে পড়শি দেশের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদীরা যদি খ্যাপা কুকুর হয়, তা হলে পাকিস্তান তার হিংস্র মনিব।’’ জাপানের প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গেও দেখা করেন অভিষেক। আগামী দুর্গাপুজোয় তাঁদের কলকাতায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অভিষেক।