RG Kar Medical College and Hospital Incident

আরজি কর-কাণ্ডে শিয়ালদহ কোর্টে সিবিআই চতুর্থ ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দিল, বয়ানের নথি চাইলেন বিচারক

নির্যাতিতার পরিবার আদালতে জানিয়েছিল, সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে তারা জানতে পারছে না। তার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছিল সিবিআই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৫ ১৮:২৮
CBI submitted fourth status report over RG Kar case in Sealdah Court

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আরজি কর ধর্ষণ ও হত‍্যা মামলায় শিয়ালদহ আদালতে চতুর্থ ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি তাদের আগের দুই রিপোর্টে যাঁদের জেরা করা হয়েছে বলে দাবি করেছিল, সেই নথি দেখতে চাইলেন বিচারক। আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার।

Advertisement

এর আগে একটি স্টেটাস রিপোর্টে ২৪ জন এবং পরে আরেকটি স্টেটাস রিপোর্টে ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ছিল বলে সিবিআই জানিয়েছিল আদালতকে। মঙ্গলবার ওই ৩৬ জনের বয়ানের নথি দেখতে চান বিচারক। আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্টেটাস রিপোর্টে উল্লেখিত ‘অগ্রগতি’ নিয়ে সিবিআইয়ের উদ্দেশে বিচারকের মন্তব্য, ‘‘শুধুই রিপোর্টের অপেক্ষা করলে হবে না। এক জন সরকারি ডাক্তার তাঁর কর্মক্ষেত্রে খুন হয়েছেন। সেটাকে আপনাদের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’’

নির্যাতিতার আইনজীবীরা মঙ্গলবার অভিযোগ করেন,‘‘সিবিআই শব্দ নিয়ে খেলছে।’’ এই রিপোর্টের বেশির ভাগ অংশই আগের রিপোর্টের ‘কপি-পেস্ট’। সিবিআই শুধু বলে যাচ্ছে— সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে, বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ‍্য যাচাই করা হচ্ছে। নির্যাতিতার আইনজীবীদের অভিযোগ, চার্জশিট জমা না পড়ার কারণেই অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষ জামিন পেয়ে গিয়েছেন অথচ তার আগে পর্যন্ত সিবিআই দাবি করেছিল এঁদের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, সেই ‘প্রমাণগুলি’ কোথায় গেল? আর যদি কিছু না থাকে, তা হলে তাঁদের ৯০ দিন আটকে রাখা হল কেন? ‘লাস্ট সিন থিওরি’ মেনে তদন্ত হয়নি বলেও আদালতে অভিযোগ করেন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী। মৃত্যুর আগে নির্যাতিতাকে শেষ যাঁদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়নি বলে আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, সমাজমাধ‍্যম এবং বাকি যে তথ‍্য সিবিআইয়ের কাছে আসছে, সেগুলি নোডাল অফিসারের মাধ‍্যমে একটি সংস্থাকে দিয়ে যাচাই কারানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। পিএমও পোর্টাল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ঘটনা সংক্রান্ত ভিডিয়ো ফুটেজের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।’’ বিচারক তখন বলেন, ‘‘রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে এই মর্মে আদালতে আবেদন করুন। আদালত সেই মতো অর্ডার করবে।’’ সিবিআই জানায় রিপোর্ট চেয়ে ৫ জুন চরম সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। বিচারকের প্রশ্ন— ‘‘সমাজমাধ‍্যমে যে ভিডিয়োগুলি রয়েছে, সে গুলির রিপোর্ট চেয়েছেন তো? তা হলে ওই ভিডিয়োগুলিতে যাঁরা বিভিন্ন তথ‍্য দাবি করছেন, তাঁদেরও তো জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রথম থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নির্যাতিতার পরিবার। এই মামলায় প্রথম যে চার্জশিট সিবিআই দেয়, তাতে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয় রায়কেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই চার্জশিট অনুযায়ী বিচারপ্রক্রিয়া এগোয় এবং কলকাতা পুলিশের ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাঁকে আজীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, এই ঘটনায় একা সঞ্জয় জড়িত নন। তারা প্রশ্ন তোলে যে, বাকি অভিযুক্তদের কী হবে? নির্যাতিতার পরিবার আদালতে জানিয়েছিল, সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে তারা জানতে পারছে না। তার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাসে তদন্তের অগ্রগতির প্রথম রিপোর্ট জমা দিয়েছিল সিবিআই। এর পরে মার্চ এবং এপ্রিলে আরও দু’দফায় স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement
আরও পড়ুন