RG Kar Rape and Murder Case

আরজি করের নির্যাতিতার মা কি পুলিশের মারে আহত? তদন্ত হচ্ছে, জানালেন সিপি মনোজ, ৭টি এফআইআর বিজেপি নেতাদের নামে

শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, পুলিশের মারে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন বিজেপিকর্মী জখম হয়েছেন। যদিও পুলিশের তরফে নির্যাতিতার মাকে মারের অভিযোগ নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে আগেই। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ১২:০৪
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা।

কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। —ফাইল চিত্র।

পুলিশের বিরুদ্ধে আরজি করের নির্যাতিতার মাকে মারধরের অভিযোগ ঘিরে চাপানউতর তুঙ্গে। নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশকর্মীদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি জানালেন, নির্যাতিতার মা জখম হয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, তার তদন্ত হবে। যদি মহিলার গায়ে হাত তোলা হয়ে থাকে, তবে সেই কাজ কারা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁকে মারধর করা হয়েছে, এই অভিযোগ সত্যি না মিথ্যা, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতার মা যদি অভিযোগ করতে চান, পুলিশ কি হাসপাতালে যাবে তাঁর অভিযোগ নিতে? এই প্রশ্নের জবাবে কলকাতার নগরপাল বলেন, ‘‘অভিযোগ যদি আসে, অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ যদি না-ও পাই, আমরা (কলকাতা পুলিশ) স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করব। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের এক বছরের মাথায় শনিবার ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপি। যদিও এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক আহ্বান ছিল নির্যাতিতার বাবা-মায়ের তরফে। কর্মসূচির শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। ধর্মতলা থেকে রওনা দেওয়া ওই মিছিলে ছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁদের সঙ্গে প্রথমে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, জোয়েল মুর্মু, আশিস বিশ্বাসেরা। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কর ঘোষ, সুব্রত ঠাকুর, অশোক দিন্দা, নীলাদ্রিশেখর দানা-সহ বিজেপি বিধায়কেরা মিছিলে যোগ দেন। জওহরলাল নেহরু রোডের উড়ালপুলের র‌্যাম্পেও পুলিশ মোতায়েন ছিল, যাতে মিছিল উড়ালপুলে উঠতে না পারে। উড়ালপুলের ডান পাশের রাস্তা ধরে মিছিল এগোতে থাকে। পার্ক স্ট্রিট মোড়ের কয়েকশো মিটার আগেই বড় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছিল পুলিশ। জনা দশেক বিজেপি কর্মী মিছিলের আগে ছুটে গিয়ে প্রথমে ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পিছনের মিছিল ব্যারিকেড পর্যন্ত পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে বুঝে পুলিশও তৎপরতা বাড়াতে শুরু করে। এই হট্টগোলের মাঝে তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেন নির্যাতিতার মা। তিনি জানান, তাঁর কপালে এবং পিঠে চোট লেগেছে। তিনি আঙুল তোলেন পুলিশের দিকে।

পরে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘ওঁর ইনজুরিটা (আঘাত) যথেষ্ট সিরিয়াস (গুরুতর)। সিটি স্ক্যান হয়েছে। এমআরআই হয়েছে। অভয়ার (আরজি করের নির্যাতিতা) বাবাও আমাদের মতো অল্পবিস্তর লাঠি খেয়েছেন। কিন্তু মায়ের শাঁখা-পলা ভেঙেছে।’’ শুভেন্দুর আরও অভিযোগ, পুলিশের মারে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন বিজেপিকর্মী জখম হয়েছেন। যদিও পুলিশের তরফে নির্যাতিতার মাকে মারের অভিযোগ নস্যাৎ করে দেওয়া হয় শনিবারই। রবিবার সকালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। সব কিছু না-দেখে এখনই আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওঁর নিশ্চয়ই ‘ইনজুরি’ হয়েছে। সেটা দুঃখজনক। তবে সেটা কেন হল, কী ভাবে হল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশের তরফে মোট সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। লালবাজার সূত্রে খবর, বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা, অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীর নাম রয়েছে এফআইআরে। অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বাধাদান এবং তাঁদের হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্ত নেতারা। লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, নবান্ন অভিযানের সময় আহত হয়েছেন মোট পাঁচ পুলিশকর্মী। জওহরলাল নেহরু রোডের একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করেছে লালবাজার। তাতে এক পুলিশকর্মীকে নিগ্রহের দৃশ্য রয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)

Advertisement
আরও পড়ুন