Kolkata Municipal Corporation

পুর অধিবেশনে ‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্য নিয়ে খোঁচা দিল বিজেপি! প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছাড়ব, চ‍্যালেঞ্জ মেয়র ফিরহাদের

সজল ঘোষের মন্তব্যের পরেই মেজাজ হারান মেয়র। সভায় হইহট্টগোল শুরু হয়। তর্জনি উঁচিয়ে ফিরহাদ চিৎকার করে বলতে থাকেন, “যদি একটা বাইট কোথাও দেখাতে পারেন যে, আমি ‘মিনি পাকিস্তান’ শব্দের উচ্চারণ করেছি, তাহলে ইস্তফা দিয়ে চলে যাব।”

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৫
ফিরহাদ হাকিম।

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্য করার অভিযোগকে ঘিরে কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি! বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের কটাক্ষে মেজাজ হারালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সভায় দাঁড়িয়ে জানালেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে ফিরহাদ জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনীতিও ছেড়ে দেবেন তিনি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ সম্বোধন এবং বন্দে মাতরম স্লোগানের উপর ‘নিষেধাজ্ঞা’র বিরোধিতা করে পুরসভায় একটি নিন্দা প্রস্তাব পেশ করেন তৃণমূলের পুরসদস্য অরূপ চক্রবর্তী। ওই প্রস্তাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপর ‘সাংস্কৃতিক আক্রমণের’ প্রতিবাদে সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেন কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল। শাসকপক্ষের তরফে শেষ বক্তা ছিলেন মেয়র স্বয়ং।

বক্তৃতায় বিজেপিকে আক্রমণ করে ফিরহাদ বলেন, “ফজলুল হকের মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিলেন শ‍্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। যাঁরা পাকিস্তান চেয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল হিন্দু মহাসভা।” ফিরহাদের এই মন্তব্যের পরেই বিরোধী বেঞ্চ থেকে সজল মেয়রের উদ্দেশে বলেন, “আপনিও তো কলকাতার একটি অংশকে মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন।” সজলের এই মন্তব্যের পরেই মেজাজ হারান মেয়র। সভায় হইহট্টগোল শুরু হয়। তর্জনি উঁচিয়ে ফিরহাদ চিৎকার করে বলতে থাকেন, “যদি একটা বাইট কোথাও দেখাতে পারেন যে, আমি ‘মিনি পাকিস্তান’ শব্দের উচ্চারণ করেছি, তাহলে ইস্তফা দিয়ে চলে যাব। আমি মুসলমান। আমার দেশ ভারতবর্ষ। পাকিস্তান আমার শত্রু।” ফিরহাদকে শান্ত করতে নিজের আসন থেকে উঠে আসেন পুরসদস্য তথা রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার।

পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ জানান, এই ধরনের আক্রমণ ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে কষ্ট দেয়। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকেই এর জন্য দায়ী করেছেন তিনি। ফিরহাদ বলেন, “বাংলায় এই ধরনের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আগে ছিল না। তবে এই রাজনীতি বেশিদিন টিকবে না।” একই সঙ্গে মেয়রের সংযোজন, “আমি সংখ্যালঘু না সংখ্যাগুরু, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের পরিচয় আমরা ভারতীয়।”

‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্য সংক্রান্ত বিতর্কের সূত্রপাত কী ভাবে, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন ফিরহাদ। পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্রে তাঁর সাক্ষাৎকার বেরিয়েছিল— এমন জল্পনা উড়িয়ে দেন ফিরহাদ। ওই সংবাদপত্রে কী লেখা হয়েছে, সেই বিষয়েও তিনি অবহিত নন বলে জানান তিনি। ফিরহাদের কথায়, “আমি উর্দু পড়তে পারি না, বলতে পারি। বিজেপির অফিসে পাকিস্তানের পত্রিকা আসে। বাংলায় ওই পত্রিকা আসে না।” গল্পের গরু গাছে তোলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

অধিবেশনে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে হইহট্টগোল শুরু হওয়ার পর ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গেয়ে ‘বঙ্কিমদা’ সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শেষ করেন।

Advertisement
আরও পড়ুন