Pet Dog

বেহালা পর্ণশ্রীতে পোষ্য ক্লিনিকে পশু নির্যাতনের অভিযোগ, উদ্ধার প্যাকেটবন্দি কুকুর-বিড়ালের দেহ

কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে বেহালা পর্ণশ্রী এলাকায় একটি পোষ্য ক্লিনিকে গোলমালের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় দু’পক্ষই পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৩৬
Sensation over abuse of pet Dog raccoon in Parnasree, two cases filed on opposing allegations

ঘটনাস্থলে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের বেহালা পর্ণশ্রী থানা এলাকায় পোষ্য নির্যাতন এবং হামলার অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার রাতে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, আর মঙ্গলবার সকালেই থানায় দু’টি পৃথক অভিযোগ জমা পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মরা কুকুরের মাংস বিভিন্ন রেস্তরাঁয় পাচারের অভিযোগ এনেছেন।

Advertisement

পর্ণশ্রী থানায় প্রথমে অভিযোগ করেন সোমনাথ মিস্ত্রি এক ব্যক্তি। যিনি পর্ণশ্রী থানার বিশালাক্ষীতলা রোডের বাসিন্দা। তাঁর লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ তিনি ও অন্য স্থানীয় বাসিন্দারা সাগর মান্না রোডের একটি বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তীব্র দুর্গন্ধ পান। বাড়িটি অভিযুক্তদের পোষ্য-চিকিৎসালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সোমনাথ দাবি করেছেন, তিনি ও অন্যেরা ক্লিনিকের ভিতরে দেখতে পান, ক্লিনিকটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চালানো হচ্ছে। সেখানে বেশ কিছু পোষ্যকে অমানবিক ভাবে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে ক্লিনিকের মালিক অরুণিমা রায় ওরফে ঝিলিক, দোলা সরকার, জয় সর্দার, দীপ দেবনাথ, শিবদাস দেবনাথ ও আরও কয়েকজন তাঁদের মারধর করেন। পাশাপাশি প্রতিবাদকারী মহিলাদের অশ্লীল ভাষায় অপমান করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেখান থেকে একটি কুকুরছানা ও একটি বিড়ালছানার পচাগলা মৃতদেহও উদ্ধার হয় বলে দাবি। সেই মৃতদেহগুলি প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়া ছিল বলেও জানানো হয়েছে। প্লাস্টিক ব্যাগে করেই কুকুর তথা অন্য পোষ্যদের মাংস বিভিন্ন রেস্তরাঁয় পাঠানো হত বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

অপরদিকে, অভিযুক্ত অরুণিমাও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, সোমনাথ মিস্ত্রি ও তাঁর সহযোগীরা বেআইনি ভাবে তাঁর পোষ্য আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন, তাঁকে এবং তাঁর কর্মীদের মারধর করেন, তাঁর জামা কাপড় ছিঁড়ে দেন, অশালীন ভাষায় অপমান করেন, বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তে পুলিশ ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট পোষ্য ক্লিনিক থেকে উদ্ধার হওয়া কুকুরছানা ও বিড়ালছানার মৃতদেহ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে এবং সেগুলির ময়নাতদন্তেরও ব্যবস্থা করছে। ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যথাযথ ভাবে আইনি প্রক্রিয়া মেনে ওই ক্লিনিকটি চালানো হচ্ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, যিনি এই ক্লিনিকটি চালু করেছেন, তিনি আদৌ স্থানীয় বাসিন্দা নন। সেখানে পোষ্যদের সেবা দেওয়ার নাম করে এই ক্লিনিকটি খোলা হয়েছিল। কিন্তু ক্লিনিকের আড়ালে মৃত পোষ্যদের মাংস বিভিন্ন রেস্তরাঁয় পাঠানো হত বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ।

কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারপার্সন সংহিতা দাস বলেন, ‘‘আমি ঘটনাটির কথা জেনেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্রর সঙ্গেও এ প্রসঙ্গে আমি কথা বলব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুলিশ যেমন তদন্ত করছে, আমরাও খোঁজ নিয়ে দেখব যে ওই ক্লিনিকে পোষ্যদের সঙ্গে কী করা হত। মৃত পোষ্যদের মাংস আদৌ রেস্তরাঁয় বিক্রি করা হতো কি না, সে বিষয়েও খোঁজ নেব।’’

Advertisement
আরও পড়ুন