—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পনেরো বছরের বেশি পুরনোবাসের মেয়াদ বৃদ্ধির সমস্যার জট অবশেষে কাটতে চলেছে। গত মে মাসে এই সংক্রান্ত মামলারশুনানিতে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, পরীক্ষা ছাড়া তারা পুরনো গাড়ি বাতিল করবে না। তার পরিপ্রেক্ষিতে ওই সমস্যার যথাযথ সমাধান খুঁজতে পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মামলার বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার মামলাকারী ছ’টি বাস সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পরে সমস্যার সমাধানসূত্র বার করারদিকে এগিয়েছে পরিবহণ দফতর। দফতর সূত্রের খবর, মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া বাসের বছরে দু’বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে, সেই বাস রাস্তায় ছোটার আদৌ যোগ্য কিনা। বাসমালিক সংগঠনও এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাস বাতিল হওয়া ঠেকাতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থহয়েছিল বাসমালিকদের ছ’টি সংগঠন। সংগঠনের নেতৃত্ব আদালতে দাবি করেছিলেন, বাসের বয়সের পরিবর্তে রাস্তায় চলার ক্ষেত্রে তার স্বাস্থ্যকে মাপকাঠি করা হোক। পনেরোবছর বয়সের গেরোয় ভারত স্টেজ-৪ মাত্রার বাসও বাতিল হতে বসেছিল। মূলত ওই সব বাস বাতিলহওয়া আটকাতেই বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়।
তাঁদের দাবির সমর্থনে বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব আরও জানিয়েছিলেন, বাসের ইঞ্জিনের প্রযুক্তিতে এখন বিপুল বদল এসেছে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের ২০২১ সালের একটি নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করেন তাঁরা। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দূষণ এবং সুরক্ষা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে গাড়িতে যদি এমন সমস্যা দেখা দেয় যা সংশোধন করা সম্ভব নয়, শুধুমাত্র তেমন ক্ষেত্রেই সেই গাড়ি বাতিল বলে গণ্য করা হবে।
রাজ্য সরকার শুরুতে এ নিয়ে মতামত না জানালেও পরে ওই বক্তব্যের যথার্থতা স্বীকার করে নিয়ে আদালতে জানায়, ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি পরীক্ষা না করে বাতিল করা হবে না। এর জন্য যান পরীক্ষার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের ২ জুন সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, গাড়ির বয়স ১৫ বছর হলেই সেটি বাতিল বলে বিবেচিত হবে। সেই মতো ১৫ বছর পেরিয়ে যাওয়া গাড়ি নতুন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আর বিবেচিত হচ্ছিল না। আদালতে রাজ্য সরকার ওই নির্দেশিকায় বদল আনার বার্তা দেওয়ার পরে সমস্যার জট কাটার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সোমবার আদালতের নির্দেশ মেনে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস, অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি-সহ আরও চারটি সংগঠন পরিবহণসচিব এবং দফতরের অন্য আধিকারিকদেরউপস্থিতিতে বৈঠকে মিলিত হয়। সেখানে কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এক বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পরে ছ’মাসের ব্যবধানে ফের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে বলে জানানো হয়। এ-ও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গাড়ির গুরুতর ‘অসুখ’ ধরা পড়লে সেই গাড়ি বাতিল করা হবে। এ দিনের বৈঠকের সমাধানসূত্র আদালতকে জানানো হবে বলে সূত্রের খবর।