Christmas Celebration in Kolkata

নিক্কো পার্ক, ইকো পার্ক না কি সায়েন্স সিটি? পঁচিশের পঁচিশে ভিড়ের কলকাতায় ‘ফার্স্ট বয়’ কে? সপ্তরথীর হিসাব দেখে নিন

২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর, অর্থাৎ পঁচিশের পঁচিশে কলকাতার রাস্তাঘাট লোকে লোকারণ্য। বড়দিন উদ্‌যাপনের জনপ্রিয়তম সাত কেন্দ্রকে বেছে নিয়েছে আনন্দবাজার ডট কম। ভিড়ে সপ্তরথীর কে কাকে টেক্কা দিল?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৪৫
বড়দিনের রাতে কলকাতার রাস্তায় ভিড়।

বড়দিনের রাতে কলকাতার রাস্তায় ভিড়। —ফাইল চিত্র।

২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর। বড়দিনের ভিড়ে জমজমাট কলকাতার পথঘাট। পার্কস্ট্রিট থেকে বো ব্যারাক্‌স, কোথাও তিল ধারণেরও জায়গা নেই! সকাল থেকে উৎসবে মেতে উঠেছে শহর। এই দিনটি উদ্‌যাপনের জন্য বাইরে থেকেও বহু মানুষ কলকাতায় আসেন। প্রতি বছর ভিড় হয় নিক্কো পার্ক, ইকো পার্ক, ভিক্টোরিয়া, সায়েন্স সিটির মতো জায়গাগুলিতে। বড়দিনে শহরের তেমন সাতটি আকর্ষণ বা সপ্তরথীকে বেছে নিয়েছিল আনন্দবাজার ডট কম। দেখা গেল, জনপ্রিয়তার নিরিখে বাকি সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছে ইকো পার্ক! ভিড়ের হিসাবে তার ধারেকাছে আর কেউ নেই।

Advertisement
শিশুদের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত স্যান্টা ক্লজ়। বৃহস্পতিবার কলকাতায়।

শিশুদের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত স্যান্টা ক্লজ়। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: পিটিআই।

বড়দিনে যে ভিড় হবে, তার একটা আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল বুধবারই। উৎসবের আগের রাতে পার্কস্ট্রিট চত্বর ভিড়ে উপচে পড়েছিল। পার্কস্ট্রিটগামী মেট্রোয় দিনভর ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়। অর্থাৎ, ২৪ তারিখ থেকেই মানুষ উৎসবে মেতে উঠেছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনের শেষের পরিসংখ্যান বলছে, ইকো পার্কে মোট ৫০,৭০০ জন বড়দিন উদ্‌যাপন করেছেন। কলকাতার জনপ্রিয় কেন্দ্রগুলির মধ্যে আর কোথাও এত ভিড় হয়নি। ইকো পার্কের দরজা খুলে যায় প্রতি দিন সকাল ১১টায়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রবেশের টিকিট কাটা যায়। দরজা বন্ধ হয়ে যায় সাড়ে ৭টায়। বড়দিনেও এই সময়ের পরিসংখ্যানই প্রকাশ্যে এসেছে।

ভিড়ের নিরিখে কলকাতায় দ্বিতীয় আলিপুর চিড়িয়াখানা। বড়দিনে সেখানে গিয়েছিলেন ৪৪,৬৫৪ জন। শীতের মরসুমে অবশ্য চিড়িয়াখানায় প্রতি দিনই ভিড় হচ্ছে। টিকিট কাটতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে দর্শকদের। তবে বড়দিনের ভিড় বাকি দিনগুলির চেয়ে তুলনামূলক বেশি। সাধারণত বৃহস্পতিবার বাদে প্রতি দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকে। বড়দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় তা বন্ধ ছিল না।

বড়দিনের সকালে কলকাতার সেন্ট পল্‌স ক্যাথিড্রাল গির্জায় বাবার সঙ্গে ছোট্ট স্যান্টা।

বড়দিনের সকালে কলকাতার সেন্ট পল্‌স ক্যাথিড্রাল গির্জায় বাবার সঙ্গে ছোট্ট স্যান্টা। ছবি: পিটিআই।

ভিড় হয়েছে ভিক্টোরিয়া এবং সায়েন্স সিটিতেও। বড়দিনের জনপ্রিয়তায় তারাই যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ। শীতের পিকনিকের জন্য অনেকে ভিক্টোরিয়ার বাগানকে বেছে নেন। তবে ভিক্টোরিয়ার ভিতরের জাদুঘর বৃহস্পতিবার খোলা ছিল না। জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল কেবল বাইরের বাগানটি। সেখানেই সারা দিনে ভিড় করেছিলেন ৩৪,১৫১ জন! সায়েন্স সিটিও কম যায় না। প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সায়েন্স সিটি খোলা থাকে। বড়দিনে সেখানে ভিড় করেছিলেন ২২,৩১৬ জন।

বড়দিনের আগের রাতে বো ব্যারাক্‌সে ভিড়।

বড়দিনের আগের রাতে বো ব্যারাক্‌সে ভিড়। ছবি: পিটিআই।

ভিড়ের তালিকায় বড়দিনের পঞ্চম রথী জাদুঘর। অন্য অনেক কেন্দ্রের তুলনায় সেখানে ভিড় কিছুটা কম ছিল। জনসাধারণের জন্য জাদুঘরের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল প্রতি দিনের মতোই সকাল ১০টায়। বন্ধ করা হয় বিকেল ৫টা নাগাদ। বৃহস্পতিবার জাদুঘরে ভিড় করেছিলেন ৭৯৭৯ জন। যাঁরা বড়দিন উপলক্ষে পার্কস্ট্রিটে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই জাদুঘর থেকে ঘুরে গিয়েছেন।

নিক্কোপার্কে এ বছর ভিড় বেশ কম ছিল। সারা দিনে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ সেখানে গিয়েছেন। নিউ টাউনের হরিণালয় দেখতেও ভিড় করেছিলেন অনেকে। সেখানে জমায়েতের পরিসংখ্যান ৪৯৭৮। অর্থাৎ, ভিড়ের নিরিখে নিক্কোপার্ক ষষ্ঠ এবং হরিণালয় সপ্তম। এ ছাড়াও সারা দিনে শহরের অন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে মানুষ জড়ো হয়েছেন এবং ইচ্ছামতো উদ্‌যাপন করেছেন। ভিড় হয়েছিল সেন্ট পল্‌স ক্যাথিড্রাল-সহ বিভিন্ন গির্জায়। বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলিতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। বহু মানুষ স্যান্টা ক্লজ়ের মতো লাল-সাদা পোশাক এবং টুপি পরে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। বাড়তি ভিড় হয়েছে কেকের দোকান এবং বিভিন্ন চাইনিজ় খাবারের দোকানে।

Advertisement
আরও পড়ুন