Mamata Banerjee on Darjeeling disaster

দার্জিলিঙে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য, একটি করে চাকরি, উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতার

মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে অর্থসাহায্য করা হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে পরিবারের এক জন করে সদস্যকে দেওয়া হবে হোমগার্ডের চাকরি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৩৫
উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার।

উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: ফেসবুক।

দার্জিলিঙের দুর্যোগে মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে পরিবারের এক জন করে সদস্যকে দেওয়া হবে হোমগার্ডের চাকরি। সোমবার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে মমতা এ কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির জন্য ফের ভুটান থেকে ছাড়া জলকে দায়ী করেছেন তিনি। মাইথন, পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ায় এক হাত নিয়েছেন ডিভিসিকেও। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতিকে তিনি ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে আগেই ধূপগুড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি উত্তরবঙ্গে পৌঁছে প্রথমে যাবেন হাসিমারা। সেখান থেকে সোমবারই নাগরাকাটার দিকে যাবেন। যত দূর যাওয়া সম্ভব, তত দূর যাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এর পর মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মিরিকের দিকে যাবেন। দার্জিলিঙের বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরিক। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও সেখানেই। মিরিকের দিকেও যত দূর সম্ভব যাবেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলবেন।

রাজ্য সরকারের কাছে এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর হিসাব রয়েছে, জানিয়েছেন মমতা। তার মধ্যে ১৮ জন মিরিক-কালিম্পঙে এবং নাগরাকাটায় আরও পাঁচ জন। অর্থসাহায্যের কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘টাকা কখনও জীবনের বিকল্প হতে পারে না। এটা আমাদের তরফ থেকে সামান্য সামাজিক কর্তব্য। মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। পরিবারের এক জনকে দেওয়া হবে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি। যাতে তাঁদের কাউকে কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে না-হয়।’’

শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিঙে বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। বহু রাস্তায় ধস নেমেছে। জলস্তর বেড়ে বিপদসীমা ছাপিয়ে গিয়েছে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার মতো নদী। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তিস্তার জলের কারণে। রবিবার সকালে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে বসে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছিলেন উত্তরের পাঁচ জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে। সোমবার বিমানবন্দর থেকে তিনি বলেন, ‘‘ভুটান এবং সিকিমের জলে উত্তরবঙ্গে বন্যা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১২ ঘণ্টায় টানা ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অতি দুর্যোগের সঙ্গে ম্যান মেড বন্যা। এত জল যাবে কোথায়? আমরা বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের জল সহ্য করি। আর কত করব?’’ পর্যটকদের নিরাপদে পাহাড় থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারের এক জন এখনও নিখোঁজ। তা ছাড়া বাকি পর্যটকদের আমরা নামিয়ে আনছি। ৪৫টি ভলভো বাস এবং উত্তরবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ দফতরের বাস দেওয়া হয়েছে। ২৫০ জনকে শিলিগুড়িতে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়াও এখনও যাঁরা আটকে আছেন, হোটলগুলোকে বলেছি তাঁদের থেকে টাকা না-নিতে। ওঁদের নামানোর দায়িত্ব আমাদের। জলে তো অনেকের টাকাপয়সা, কাগজ নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের মানবিক হতে হবে। পর্যটকেরা নিরাপদ আছেন। মিরিক ও নাগরাকাটায় কমিউনিটি কিচেন শুরু হয়েছে।’’

রবিবার বিকেলে কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল ছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে অনেকে কটাক্ষ এবং সমালোচনা করেছেন। মমতা বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোয় কোটি কোটি মানুষ কলকাতায় এসেছেন। ক্লাব কমিটিগুলি ভাল কাজ করেছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে সবটা সম্পন্ন হয়েছে। তার জন্য ওদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি কিছু দিন আগে উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলাম। আজ (সোমবার) লক্ষ্মীপুজো। ঘরে ঘরে পুজো হয়। তা সত্ত্বেও আমাকে যেতে হচ্ছে। উৎসব তো বড় নয়, মানবিকতাই বড় কথা।’’

Advertisement
আরও পড়ুন