Kanghabati River

দীর্ঘদিন বিপদসীমায় নদীর জল, দুর্বল কংসাবতীর বাঁধ

সেচ দফতর সূত্রে খবর, জেলার রূপনারায়ণ নদ, হলদি নদী-সহ একাধিক নদীতে সারা বছরই জল থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৮
পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের সেচ দফতরের কংসাবতী নদীর গেজ স্টেশন।

পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের সেচ দফতরের কংসাবতী নদীর গেজ স্টেশন। নিজস্ব চিত্র।

অতিরিক্ত বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে কংসাবতী নদী। তবে বৃহস্পতিবার তুলনায় জল বেশ কিছুটা কমেছে। ইতিমধ্যেই নদী বাঁধে তৈরি হওয়া একাধিক গর্ত সেচ দফতর সারিয়েছে। কিন্তু লাগাতার নতুন গর্তের হদিস মিলছে। জল কমলেও নদী বাঁধের দুর্বলতা চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের।

সেচ দফতর সূত্রে খবর, জেলার রূপনারায়ণ নদ, হলদি নদী-সহ একাধিক নদীতে সারা বছরই জল থাকে। নদীগুলির জল ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। সেই জায়গায় কংসাবতী নদীতে কেবলমাত্র বর্ষার সময়ই জল থাকে। মূলত পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বর্ষার জল মেদিনীপুর ব্যারেজ (অ্যানিকেত) ও মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া হলে তা কংসাবতী হয়ে বয়ে যায়। ঢেউ ভাঙার কাছে মেশে হলদি নদীতে। বর্ষা কাটলেই নদী শুকনো হয়ে যায়।

কয়েক বছর ধরে দেখা গিয়েছে, কংসাবতী নদীতে অতিরিক্ত বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বয় খুব বেশি হলে ১০-১২ দিন। তার পর দ্রুত জল কমে। কিন্তু চলতি বছরে ২০ জুন থেকে জুলাই মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত টানা বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে নদী। বৃহস্পতিবারও মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ১৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। সেচ দফতরের আধিকারিকদের দাবি, নদীর বাঁধে দীর্ঘদিন জলের লাগাতার চাপ থাকার কারণে মাটি নরম হতে শুরু করেছে। বাড়তি নজরদারি চালাতে হচ্ছে। দুর্বল জায়গাগুলি খুঁজে ত্রিপল দিয়ে বাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নদী বাঁধের দুর্বলতা গর্ত তৈরি হওয়ার চেয়েও বিপদজনক বলে দাবি প্রশাসনের।

এ দিকে ঢেউভাঙা থেকে রামচন্দ্রপুর পর্যন্ত কংসাবতী নদী ইতিমধ্যেই খনন করা হয়েছে। বেঁধে ফেলা হয়েছে পাড়গুলিও। কিন্তু রামচন্দ্রপুর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের লোয়াদার নন্দবাড়ি পর্যন্ত নদী সংস্কার হয়নি। মজবুত করা হয়নি পারও। নদী বাঁধ সবচেয়ে বিপজ্জনক পাঁশকুড়া ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। যে কারণেই দ্রুত কংসাবতী নদীর বাকি অংশে খনন করার দাবি জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি।

সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন কংসাবতী নদীর জল ধারণ ক্ষমতার বাড়ানোর কোনও রকম পরিকল্পনা করেননি। কংসাবতী নদী যদি পরিকল্পনা করে কেটে গভীরতা বাড়ানো হতো তা হলে জলস্তর অনেকটাই কম থাকত। বাঁধগুলিও সুরক্ষিত করা যেত নতুন মাটি ফেলে। আর তা না করার কারণেই প্রতি বছর বন্যা আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।’’

পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন কংসাবতী নদীতে একটানা বিপদ সীমার উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হওয়ার কারণে বাঁধগুলি রীতিমতো দুর্বল হয়েছে। তবে প্রশাসন সতর্ক ভাবে ওই দুর্বল জায়গাগুলিতে নজরদারি চালাচ্ছে। দ্রুত কংসাবতী নদীর বাকি থাকা অংশ কাটার পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করবে সেচ দফতর।’’

আরও পড়ুন