Student Mystery Death In Dantan

‘সিলিং ফ্যানে গলা কেটে গিয়েছে’! হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরে মৃত্যু ১৩ বছরের বালকের, গ্রেফতার সৎমা

সৎমায়ের দাবি, ঘুম থেকে উঠে ভুলে খাটের উপর দাঁড়িয়ে পড়েছিল ইকবাল। সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটে গিয়েছে তার। যদিও পুলিশ এই ‘যুক্তি’ মানতে নারাজ। তারা নাবালককে খুনের অভিযোগে ২০ বছরের সৎমাকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫ ১৮:১৬
নাবালককে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সৎমা!

নাবালককে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সৎমা! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বাবা কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। দিন সাতেক আগে হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিল ১৩ বছরের ইকবাল বক্স। শনিবার সকালে তাঁর গলাকাটা দেহ উদ্ধারে শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের তুরকা এলাকায়। সৎমায়ের দাবি, ঘুম থেকে উঠে ভুলে খাটের উপর দাঁড়িয়ে পড়েছিল ইকবাল। সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটে গিয়েছে তার। যদিও পুলিশ এই ‘যুক্তি’ মানতে নারাজ। তারা নাবালককে খুনের অভিযোগে ২০ বছরের সৎমাকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, ইকবালের মায়ের সঙ্গে বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল কয়েক বছর আগে। কিছু দিন আগে বাবা আবার বিয়ে করেন। ইকবাল একটি মাদ্রাসা স্কুলে পড়াশোনা করত। সেখানকার হস্টেলে থাকত। দিন সাতেক আগে বাড়ি ফেরে। শনিবার সকালে ছেলেটির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে খণ্ডরুই গ্রামীণ হাস‌পাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মৃত্যু হয়েছে বালকের। সৎমায়ের দাবি, সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটে গিয়েছিল ইকবালের। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে এক তুতো দাদার সঙ্গে ঘুমোতে গিয়েছিল ছেলে। রাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। ভুল করে খাটের উপর দাঁড়িয়ে পড়েছিল সে। তাতেই ওই দুর্ঘটনা। যদিও জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে ২০ বছরের সানোয়ারা বিবির ওই কথায় সন্দেহ হয় পুলিশের। ইকবালের মৃত্যুর ঘটনায় তারা সৎমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। অভিযুক্তের কথাবার্তায় বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে, এই অভিযোগে শেষমেশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওর (ইকবাল) সৎমা বলছে, ছেলে ভুল করে খাটে দাঁড়িয়ে পড়ায় ওই দুর্ঘটনা। কিন্তু আমাদের খটকা লেগেছিল। পুলিশও সন্দেহ করছে। আমাদের মনে হয় ছেলেটিকে খুন করেছে ওর সৎমা।’’ তিনি জানান, ইকবালের বাবা মুম্বইয়ে কাজ করেন। ইকবাল হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করত। সৎমার সঙ্গে তার সম্পর্ক কতটা ভাল ছিল, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে প্রতিবেশীদের।

ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ দেহ পাঠিয়েছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে থানায়। তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইকবালের গলায় কোপ মারা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক নাবালকের গলা কেটে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর জানা মৃত্যুর কারণ। তবে সিলিং ফ্যানের ‘তত্ত্বের’ পাশাপাশি অন্য সব দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে ছেলেটির সৎমাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। তদন্ত চলেছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন