Humayun Kabir

হুমায়ুনের বাড়িতে গেল পুলিশ, মারধরের অভিযোগে আটক পুত্র! পাল্টা বহরমপুর স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি কবীরের

রবিবার সকালে তাঁর বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। অভিযোগ, হুমায়ুনের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেছেন তাঁর পুত্র। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভরতপুরের বিধায়ক।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৩
হুমায়ুন কবীর।

হুমায়ুন কবীর। — ফাইল চিত্র।

ভরতপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা হুমায়ুন কবীরের শক্তিপুরের বাড়িতে গেল পুলিশ। রবিবার সকালে তাঁর বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। অভিযোগ, হুমায়ুনের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেছেন তাঁর পুত্র। তাঁকে আটক রাখা হয়েছে বলে খবর। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভরতপুরের বিধায়ক। তাঁর পাল্টা দাবি, যদি পুলিশ বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে তবে বহরমপুর স্তব্দ করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করার কথা বলেছেন ক্ষুব্ধ হুমায়ুন।

Advertisement

জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে হুমায়ুনের বাড়িতে যায় শক্তিপুর থানার একদল পুলিশ। বাড়িতে গিয়ে তাঁর পুত্র গোলাম নবি আজাদ ওরফে সোহেলের খোঁজখবর শুরু করে। হুমায়ুন তখন বাড়িতে ছিলেন না, ছিলেন বহরমপুরে। কেন ভরতপুরের বিধায়কের বাড়িতে পুলিশ গেল? অভিযোগ, হুমায়ুনের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেন তাঁর পুত্র। সেই কারণে তাঁর বাড়ি যায় পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দলীয় কর্মীদের নিয়ে নিজের বিধায়ক অফিসে বৈঠক করছিলেন হুমায়ুন। সে সময় ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, হুমায়ুনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রাজ্য পুলিশের এক কনস্টেবল বৈঠকের মাঝেই অফিসঘরে ঢুকে ছুটি চান। কিন্তু হুমায়ুন ছুটি দিতে চাননি। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। তখন হুমায়ুন ওই কনস্টেবলকে চড় মারেন বলেও অভিযোগ। পাল্টা চড়াও হন ওই কনস্টেবল। সে সময় তাঁর পুত্র এসে নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেন। তার পরই ওই নিরাপত্তারক্ষী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান।

কনস্টেবলের অভিযোগ পেয়ে হুমায়ুনের শক্তিপুরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, হুমায়ুনের পুত্রকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও হুমায়ুনের দাবি, ওই কনস্টেবলই তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার অফিসঘরে ঢুকে আমাকে মারতে গিয়েছিল ওই নিরাপত্তারক্ষী। তাই আমার ছেলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেয়। প্রয়োজনে প্রমাণ হিসাবে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হবে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, হুমায়ুনের বাড়ি-অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। দু’টি পেনড্রাইভে ওই ফুটেজ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তার পরেই হুমায়ুনের হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশ সুপারকে বলব, মুর্শিদাবাদকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ পুলিশ যেন না করে। অপেক্ষা করব। বাড়িতে যদি পুলিশ কিছু করে, ছেলে-স্ত্রী-বৌমা আছেন, তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ যদি করে, ঘণ্টাদুয়েক পরে ঘোষণা করব, বৃহস্পতিবার ১২টা থেকে ঘেরাও করে জবাব চাইব। বহরমপুর স্তব্ধ করে দেব। পারলে আটকে দেখাক।’’ তবে তার পরে পুলিশ গোলামকে আটক করে শক্তিপুর থানায় নিয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে বহরমপুর থেকে শক্তিপুর থানায় যান হুমায়ুন। এসডিপিও ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘ছুটি চাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে মারধরের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’’

এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি (হুমায়ুন) নিজে স্বীকার করেছেন নিরাপত্তারক্ষীর গায়ে হাত তুলেছেন। পুলিশের গায়ে হাত তুললে পুলিশ পদক্ষেপ করবেই। উনি নিজের দলের প্রার্থীকে ধরে রাখতে পারেন না, নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে রাখতে পারেন না।’’

উল্লেখ্য, হুমায়ুন তৃণমূল ছেড়ে নতুন দল গঠন করেছেন। তবে তাঁর পুত্র গোলাম এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। তিনি বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ।

Advertisement
আরও পড়ুন