ব্রোঞ্জজয়ী নকুলচন্দ্র চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
ছোটবেলা থেকেই অ্যাথলেটিক্স ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। স্কুল-কলেজে পড়ার সময়েও দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করতেন তিনি। চাকরি জীবনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। অবসর নিয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু অ্যাথলেটিক্সে তাঁর উৎসাহ কমেনি। রোজ সকালে মাঠে তাঁর দেখা মিলবেই। মালদহের ফুলবাড়ি সংলগ্ন মনস্কামনা রোডের বাসিন্দা নকুলচন্দ্র চৌধুরী ২৩তম এশিয়া মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ১৫০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। ৮৪ বছরে তাঁর এই সাফল্য প্রশংসা কুড়িয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় অভাব-অনটন এতটাই ছিল যে বাবার সঙ্গে নকুল খেজুরের রস বিক্রি করতেন। ওই পরিস্থিতির মধ্যেও মালদহের অক্রুরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউটে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে মালদহ কলেজ থেকে স্নাতক হন। স্কুল-কলেজে ১০০, ৪০০ এবং ৮০০ মিটার দৌড়ে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। স্নাতক হয়ে তিনি কয়েকটি চাকরি ছেড়ে কেন্দ্রীয় আবগারি বিভাগে চাকরি নেন ও সেখানে সুপারিন্টেন্ডেন্ট হয়ে ২০০২ সালে অবসর নেন। তবে অ্যাথলেটিক্সের অনুশীলনে তাঁর উৎসাহ কমেনি। চুরাশি বছর বয়সে এসে ৫-৯ নভেম্বর চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত ২৩তম এশিয়া মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ১৫০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। এ বছরেরই ২০-২৬ এপ্রিল হিমাচল প্রদেশে ন্যাশনাল মাস্টার্স গেমসে তিনি ৪০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক, ৫ কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় রুপোর পদক এবং ১৫০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। ৪-৯ মার্চ বেঙ্গালুরুতে ৪৫ তম ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১৫০০ মিটার দৌড়েও তিনি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। নকুল বলেন, “শরীরকে ঠিক রাখাই সাফল্যের সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি।” তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “খেলা বা শরীরচর্চাকে ভালবাসলে জীবন অনেক সুন্দর হয়। বয়স যতই হোক, মন যদি তরুণ থাকে, জয় নিশ্চিত।”