মৃত সুভাষ ছেত্রী। —ফাইল চিত্র।
বছর দুই আগে গোয়ার সেই নৈশক্লাবে কাজ নিয়ে বাগডোগরা থেকে উড়ে গিয়েছিলেন সুভাষ ছেত্রী নামে বছর চব্বিশের যুবক। কাজের ফাঁকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু শনিবার রাতে গোয়ার ওই নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ফোন বন্ধ ছিল তাঁর। পরে পরিবার জানতে পারে, অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে সুভাষের!
শনিবার রাতে যখন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন ক্লাবের রান্নাঘরেই ছিলেন বাগডোগরার বানুরছাট এলাকার বাসিন্দা সুভাষ। ওই ক্লাবে রান্নার কাজ করতেন তিনি। দু’বছর ধরে সেখানেই ছিলেন। আগুন লাগার পর আর বার হতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর খবর বাগডোগরার বাড়িতে এসে পৌঁছোতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে।
পরিবারে এক মাত্র রোজগেরে ছিলেন সুভাষ। বাড়িতে রয়েছেন মা এবং দিদি। পুত্রের মৃত্যুতে দিশাহারা টঙ্কা মায়া ছেত্রী। ভাইয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না ঊর্মিলাও। তিনি জানান, বিস্ফোরণের খবর দেখার পরই সুভাষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। জানানো হয়, তিনি গুরুতর আহত। কিন্তু বেঁচে রয়েছেন। তবে পরে জানতে পারেন সুভাষের মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ড এবং ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলছেন ঊর্মিলা। তাঁর দাবি, ওই ক্লাবে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। ক্লাব কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি করেছে সুভাষের পরিবার।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সয়ন্তের নির্দেশে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্ত শুরু হয়েছে। রবিবারই ওই ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনও অধরা ওই ক্লাবের মালিক সৌরভ সৌরভ লুথরা। পুলিশ তাঁর খোঁজ না-পেলেও সোমবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তাঁর ক্লাবের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন তিনি। সেই পোস্টে তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর ভাবে শোকাহত এবং মর্মাহত। ক্ষতিগ্রস্তদের ‘সকল প্রকার সহায়তা এবং সহযোগিতার’ আশ্বাস দেন সৌরভ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই দেশ ছাড়েন তিনি। সম্ভবত ফুকেটে গিয়ে থাকতে পারেন ওই নৈশক্লাবের মালিক।