Birthday of Toy Train

টয় ট্রেনের ১৪৪ বছর! প্রথম বার পাহাড়ের খেলনা গাড়ির জন্মদিন উদ্‌যাপনে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল

১৮৭০ সালে প্রথম বার টয় ট্রেন চালানো হয়। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের পাহাড়কে টয় ট্রেনের মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য ওই উদ্যোগের নয় বছর পর ১৮৭৯ থেকে কাজ শুরু হয়। তার পর আরও দু’বছর কেটে যায়। ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের উদ্দেশে গড়িয়েছিল প্রথম টয় ট্রেনের চাকা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৪:২৫
Birthday of Toy Train

টয় ট্রেনের জন্মদিন পালন। —নিজস্ব চিত্র।

পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যাওয়ার জন্য এখনও পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় সে। গত কয়েক মাসে বার বার দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলেও টয় ট্রেন থেকে মুখ ফেরাতে পারেননি কেউ। পাহাড়ের বাঁকে ‘কু ঝিক ঝিক’ আওয়াজ তুলে মন্থর গতিতে এগিয়ে যাওয়া সেই যান পৌঁছে গিয়েছে ১৪৪তম ‘জন্মবর্ষে।’ বস্তুত, এই প্রথম বার টয় ট্রেনের জন্মদিন উদ্‌যাপন করল দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (ডিএইচআর)। ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ শিরোপা পাওয়া ডিএইচআর এবং নর্থ বেঙ্গল পেন্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ৪ জুলাই ‘টয় ট্রেন দিবস’ পালন হল সুকনা রেলস্টেশনে।

Advertisement

টয় ট্রেনের জন্মদিন উপলক্ষে সারা দিন ধরে নানা অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়েছে শুক্রবার। সমস্ত অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতার ‘থিম’ টয় ট্রেন। ডিএইচআরের আশা, টয় ট্রেনের মাধ্যমে আগামিদিনে পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার আনবেন তাঁরা। দার্জিলিঙের টয় ট্রেনের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেগুলো ক্রমশ প্রকাশ্য।

ব্রিটিশ আমল। ১৮৭০ সালে প্রথম বার পরীক্ষামূলক ভাবে টয় ট্রেন চালানো হয়। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের পাহাড়কে টয় ট্রেনের মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য ওই উদ্যোগের নয় বছর পর ১৮৭৯ থেকে বাণিজ্যিক ভাবে চালানোর জন্য কাজ শুরু হয়। তার পর আরও দু’বছর কেটে যায়। ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের উদ্দেশে গড়িয়েছিল প্রথম টয় ট্রেনের চাকা। ওই দিনটিকে স্মরণে রেখে এ বছর ৪ জুলাই টয় ট্রেনের জন্মদিন পালনে উদ্যোগী হয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকনা রেলস্টেশনে টয় ট্রেন দিবস পালন অনুষ্ঠানে ‘বসে আঁকো প্রতিযোগিতা’, ‘পোস্টার মেকিং’, ‘লাইভ আর্ট’ এবং ‘চিত্র প্রদর্শনী’-র আয়োজন করা হয়। বেশ কয়েকটি স্কুলের কচিকাঁচারা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। নতুন গান বাঁধা হয় টয় ট্রেনকে নিয়ে। এটাই ‘খেলনা গাড়ি’কে জন্মদিনের উপহার।

এখন থেকে জয় রাইডের সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু থেকে অত্যাধুনিক টয় ট্রেনের ইঞ্জিন নিয়ে আসা, প্রত্যেক স্টেশনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা, মিউজিয়াম ও ওয়ার্কশপগুলিকে ঢেলে সাজার উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে তার থেকেও বেশি টয় ট্রেনকে ঘিরে এই ধরনের অনুষ্ঠান এবং উৎসব পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে আশাবাদী ডিএইচআরের আধিকারিকেরা। সুকনা স্টেশনের ম্যানেজার তপন মালাকার বলেন, ‘‘এই প্রথম টয় ট্রেন দিবস বা তার জন্মদিন পালনে উদ্যোগী হয়েছি। সুকনা স্টেশন ব্রিটিশ রেল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। কাজেই প্রথম বার জন্মদিনে এই স্টেশনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। টয় ট্রেন বা পর্যটনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এই অনুষ্ঠানে। আমরা আশা রাখছি, ঘুম ফেস্টিভ্যাল বা সামার ফেস্টিভ্যালের মতো ‘টয় ট্রেন ডে’ পর্যটকদের কাছে আলাদা করে জায়গা করে নেবে।’’

টয় ট্রেন দিবসে অংশগ্রহণ করেছিল স্কুলছাত্রী শ্রেয়সী বিশ্বাস। সে বলে, ‘‘এটা আমাদের কাছে একটা উপরি পাওনা। আমাদের ভাল লাগার টয় ট্রেনের জন্য কিছু একটা করার আনন্দটাই অন্যরকম।’’ আর এক অংশগ্রহণকারী সুচেতনা দাস বলেন, ‘‘টয় ট্রেন মানে নস্টালজিক একটা জিনিস। একটা আলাদা অনুভূতি। ওর জন্মদিনে অংশ নিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’ স্কুলশিক্ষিকা পৌলমী সরকার রায়ের সংযোজন, ‘‘টয় ট্রেনকে নিয়ে একটি গান তৈরি করেছি আমরা। সেটা স্টেশনে বাজানো হল। বিভিন্ন স্টেশনে বাজানো হবে গানটি। এটা আমাদের কাছে বড় পাওনা।’’

Advertisement
আরও পড়ুন