Unnatural Death of Student in Malda

আরজি করের ডাক্তারি ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু! বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগ তুলে প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় গেল পরিবার

যাদবপুরকাণ্ডের পরদিনই এক আদিবাসী ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু মালদহে! দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রী আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে অশান্তির জেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন ওই তরুণী। যদিও পরিবারের দাবি, মেয়েকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৯
এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

যাদবপুরকাণ্ডের পরদিনই এক আদিবাসী ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু মালদহে! দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ওই নিহত ছাত্রী আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ওষুধের ওভারডোজ়ের কারণে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, প্রেমিকের সঙ্গে অশান্তির জেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন তিনি। যদিও পরিবারের দাবি, মেয়েকে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত তরুণীর বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। শুক্রবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই তরুণীর। পুরুলিয়ার বাসিন্দা ওই যুবক মালদহ মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। দাবি, পুরীর মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেছিলেন তাঁরা। নিহত ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তাঁর মেয়ে। সে কথা জানতে পেরে মা দু’জনকে সামাজিক মতে বিয়ে করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। মেয়ে তাতে রাজি হন। বিয়ের জন্য প্রেমিককে চাপও দিতে শুরু করেন। কিন্তু প্রেমিক তাতে রাজি ছিলেন না। তিনি তাঁকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। এর পর ধীরে ধীরে দু’জনের সম্পর্কে তিক্ততা আসে বলে দাবি। এমতাবস্থায় দিন চারেক আগে ওই তরুণী প্রেমিকের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করার জন্য মালদহে যান। মালদহে একটি হোটেলে ঘরও ভাড়া নেন তিনি।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ফোনে তরুণীর পরিবারকে জানানো হয়, তাঁদের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছে পরিজনেরা দেখেন, তত ক্ষণে মেয়ের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে সরব হয়েছে নিহত ছাত্রীর পরিবার। মায়ের দাবি, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁর প্রেমিকই ষড়যন্ত্র করে তাঁকে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে খুন করেছেন। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বালুরঘাটের আদর্শ স্কুল পাড়া এলাকায় বাড়ি ওই ছাত্রীর। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। পড়াশোনা করেছেন বালুরঘাট গার্লস স্কুলে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই তরুণী খুবই নম্র ও ভদ্র স্বভাবের ছিলেন। এ হেন মেয়ে যে হঠাৎ আত্মহত্যা করতে পারেন, বিশ্বাসই হচ্ছে না পড়শিদের। তাঁর মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, আপাতত সে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এখনও আসেনি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।’’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন রুম সংলগ্ন পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়ার দেহ। ঘটনায় তদন্ত চলছে। সেই ঘটনার পরদিনই ফের ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনা ঘটল মালদহে।

(ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মতো ঘটনায় আদালত যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আইনি বাধা রয়েছে নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশেও। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম এই ঘটনায় মৃতা ছাত্রী এবং অভিযুক্ত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে। মামলা দায়েরের আগে কোথাও নাম-ছবি প্রকাশিত হলে, তা-ও সরিয়ে ফেলা হয়েছে)

Advertisement
আরও পড়ুন