TMC Clash

দিদির ‘দাওয়াই’ কাজে দিল? কোচবিহারে মমতার মঞ্চে ‘কাছাকাছি’ তৃণমূলের চারমূর্তি, তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটবে কি?

উদয়ন-অভিজিৎ আঁতাঁত দলের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ ছিল রবীন্দ্রনাথের। তাঁর দাবি ছিল, দলের পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তবে সেই দ্বন্দ্ব মিটল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৯
TMC\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s Rabindranath Ghosh, Udyan Guha Avijit De Bhowmik both were presented in the meeting of Mamata Banerjee’s visit in Cooch Behar

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভায় কোচবিহারে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।

দ্বন্দ্ব কি মিটল? কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার আগে আবার জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের সকলকে পাশাপাশি বসে আলোচনা করতে দেখা গেল। শুধু তা-ই নয়, মমতার সভামঞ্চেও প্রায় পাশাপাশি থাকলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উদয়ন গুহ, অভিজিৎ দে ভৌমিক এবং গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াও। সকলের মুখে একই কথা, ‘‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব।’’ তবে তার পরেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, আদৌ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটল কি?

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরেই তৃণমূলের অন্দরের গোষ্ঠীকোন্দলের উত্তপ্ত কোচবিহার। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা কোচবিহার পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিতের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সুর চড়াচ্ছিলেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ! উদয়ন-অভিজিৎ আঁতাঁত দলের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ ছিল তাঁর। রবীন্দ্রনাথের দাবি ছিল, দলের পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় তাঁদের ফাঁসানোর অভিযোগও করেন রবীন্দ্রনাথ। শুধু তা-ই নয়, কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথকে ইস্তফার নির্দেশ দেওয়া নিয়েও তৃণমূলের সভাপতি অভিজিতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল। তবে মঙ্গলবার সেই সব দ্বন্দ্বের কোনও ছবিই দেখা গেল না কোচবিহারে। বরং, দলনেত্রীর সামনে সকলেই ‘হাতে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে’ চলার সঙ্কল্প নিলেন।

সোমবার কোচবিহারে যান মমতা। সেখানে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, তার পর কোচবিহারের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন মমতা। শোনেন সকলের বক্তব্য। তবে সকলকে তিনি একটাই নির্দেশ দেন, দ্বন্দ্ব মিটিয়ে এক হতে হবে! মমতার নির্দেশ পাওয়ার পরই মঙ্গলবার কোচবিহারের তৃণমূলের মধ্যে ঐক্যের ছবি দেখা গেল। সব দ্বন্দ্ব কর্পূরের মতো উবে গিয়ে একই মালায় গাঁথা ফুলের মতো সকলে উপস্থিত হলেন রাসমেলা ময়দানে। বললেন, ‘‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’

কোচবিহারের সভামঞ্চ থেকেও মমতার মুখে ‘ঐক্যের’ কথাও শোনা গেল। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কথা বলতে গিয়ে সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দেন দলনেত্রী। সভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘এসআইআরের শুনানিতে ডাকলে যাবেন। কাগজপত্র যা থাকবে নিয়ে যাবেন। যদি না থাকে, তবে সেই সমস্যার কথা জানান। দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। যদি কারও কোনও সমস্যা থাকে তবে সাহায্য করার জন্য দলের বিএলএ-রা যেমন কাজ করছে করবে।’’ একই সঙ্গে দলকেও সাহায্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার জন্য বলেন মমতা। তাঁর বার্তা, ‘‘দলেও যেন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে। মনে রাখবেন, যুদ্ধ যখন হয় তখন সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হয়।’’

মমতার কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের কথায়। গিরীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘সবাই আমরা একসঙ্গেই রয়েছি। একসঙ্গেই চলি। মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দেবেন, দল যা নির্দেশ দেবে তা-ই বাস্তবায়িত হবে। এখানে সব ঐক্যবদ্ধ।’’ রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘দলনেত্রী সবাইকে একসঙ্গে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিজেপিকে পরাস্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আমরা একসঙ্গে লড়ে বিজেপিকে হারাব। বিজেপিকে হারিয়ে সব আসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিতে চাই।’’

Advertisement
আরও পড়ুন