Murshidabad Unrest

মুর্শিদাবাদ: উপদ্রুত শমসেরগঞ্জ ও সুতি থানার ওসিকে সরাল ভবানী ভবন, আনা হল আইসি পদমর্যাদার অফিসারদের

মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ এবং সুতি থানার ওসিকে এ বার সরিয়ে দিল রাজ্য পুলিশ। পুলিশের অন্দরের অনেকের মনে প্রশ্ন, ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’র কারণেই কি এই সিদ্ধান্ত?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ২০:১৯

—ফাইল ছবি।

নয়া ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুই থানা এলাকাতেই অশান্তি ছড়িয়েছিল গত সপ্তাহে। তাতে তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে। মুর্শিদাবাদের সেই শমসেরগঞ্জ এবং সুতি থানার ওসিকে এ বার সরিয়ে দিল রাজ্য পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এত দিন ওই দুই থানায় সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার ওসি ছিলেন। এ বার সেখানে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার নিয়ে আসা হল। ফলে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার অন্তর্গত ওই দুই থানার গুরুত্বও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ রয়েছে কি না, তা নিয়ে পুলিশের অন্দরে আলোচনা চলছে। রাজ্য সরকার যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে, তার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ একটি সূত্রের খবরের ভিত্তিতে সে কথা লিখেছিল আনন্দবাজার ডট ইন। পরে রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশের অন্দরের অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তা হলে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’র কারণেই শমসেরগঞ্জ এবং সুতি থানার ওসিকে সরিয়ে দিল রাজ্য পুলিশ? এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। ফলে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কিন্তু দু’টি বিষয়ের মধ্যে যে একেবারে কোনও যোগসূত্র নেই, সে কথাও পুলিশ মহলের কেউ জোর দিয়ে বলতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার ভবানী ভবন থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। জানানো হয়েছে, আইসি পদমর্যাদার সুব্রত ঘোষকে শমসেরগঞ্জ থানার দায়িত্বে পাঠানো হচ্ছে। সুব্রত এত দিন পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের সার্কল ইন্সপেক্টর পদে ছিলেন। আর সুতি থানার দায়িত্বে পাঠানো হল আইসি সুপ্রিয়রঞ্জন মাজিকে। তিনি এত পূর্ব বর্ধমানের সদর ট্র্যাফিক গার্ডের আইসি পদে ছিলেন। এত দিন শমসেরগঞ্জ এবং সুতি থানার ওসি পদে ছিলেন শিবপ্রসাদ ঘোষ এবং বিজন রায়। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনকেই জেলার পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে, তা হলে কি পুলিশ অফিসারের ‘শাস্তিমূলক বদলি’ হল? জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘একে শাস্তিমূলক বদলি বলা যাবে না।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘থানা দু’টিকে আসলে আইসি পরিচালিত থানায় উন্নীত করা হয়েছে। আর যাঁরা এখানে কর্মরত ছিলেন, তাঁরা সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার। ফলে তাঁদের দিয়ে আর কী ভাবে থানা চলবে? সেই কারণেই বদলি।’’

ওয়াকফ সংশোধনী আইন বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে অশান্তি ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের সুতি, শমসেরগঞ্জ এবং ধুলিয়ানে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পুলিশের সামনেই অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। বাধ্য হয়ে অনেকে ঘরছাড়াও হয়েছেন। পুলিশ মহলের অন্য একটি অংশ মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সাধারণ মানুষের মনে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফেরানো সবচেয়ে জরুরি। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ মূলত নিচুতলার পুলিশ অফিসারদের উপরে থাকে। এ ক্ষেত্রে সেই কারণেই দুই থানার ওসিকে বদলি করা হয়েছে বলেও অনেকের মনে করছেন। এই দাবিরও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে।

Advertisement
আরও পড়ুন