রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সম্পত্তি অনির্দিষ্ট কালের জন্য ফ্রিজ় করে দিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পরেই ওই সম্পত্তি আটক করা হয়েছিল। তার পর ছ’মাস অন্তত ভোটাভুটির ভিত্তিতে সেই ফ্রিজ়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছিল। এ বার পাকাপাকি ভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সম্পত্তি আটকে দিল ইউরোপ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘ দিন ধরেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য চাপ দিচ্ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নকে। সম্পত্তি ফ্রিজ় করার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে সেই চাপের ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকের মত।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ২৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ইউরোপে রয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় ওই সম্পত্তির পরিমাণ ২২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এই সম্পত্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে কাজে লাগাতে পারে ইউরোপীয় দেশগুলি। প্রথম থেকেই যুদ্ধে ইইউ ইউক্রেনের পক্ষে। ইউক্রেনকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়ে রেখেছে। কারণ, রাশিয়ার আগ্রাসনকে ইউরোপ তাদের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক বলে মনে করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে দু’টি দেশের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে— হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়া। রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সম্পত্তি ফ্রিজ় করার বিষয়ে প্রতি ছ’মাস অন্তর যে ভোটাভুটি হত, তাতে এই দুই দেশের বেঁকে বসার সম্ভাবনা থেকেই যেত। অনির্দিষ্ট কালের জন্য সম্পত্তি ফ্রিজ় করে দেওয়ায় আপাতত আর সেই সুযোগ রইল না।
রাশিয়ার সম্পত্তির মাধ্যমে যুদ্ধে সহায়তার জন্য ইউক্রেনকে ঋণ দিতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিলে ইউক্রেন ইইউ-এর সেই ঋণ পরিশোধ করবে। এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর ইউরোপের নেতারা বৈঠকে বসবেন। তার আগে রাশিয়ার সম্পত্তি ফ্রিজ় করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দেশ।
প্রায় চার বছর ধরে যুদ্ধ চলছে পূর্ব ইউরোপে। যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। মার্কিন কুর্সিতে বসার আগে থেকে ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই যুদ্ধ তিনি থামিয়ে দেবেন। কিন্তু এখনও সাফল্য আসেনি। যুদ্ধ থামেনি। পুতিন ও জ়েলেনস্কির সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেও সমাধান সূত্র বার করতে পারেননি ট্রাম্প। এ বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল ইউরোপ।