Sheikh Hasina

‘রাজনৈতিক নেতৃত্বও দায়ী’, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনপর্বে হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রথম বার ‘দোষ স্বীকার’ করলেন হাসিনা

চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ‘নীরবতা ভেঙে’ প্রথম বার সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন হাসিনা। সেই ইমেল সাক্ষাৎকারে গত বছরের আন্দোলনপর্বে বিপুল প্রাণহানির জন্য আন্দোলনকারী, পুলিশ-প্রশাসন এবং ‘বিদেশি চক্রান্ত’কে দুষেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২২
For the first time, former Bangladesh PM Sheikh Hasina accepted ‘leadership responsibility’ for the killing of ‘thousands of citizens’ during the mass protest against her government

শেখ হাসিনা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গণবিক্ষোভের জেরে ক্ষমতা হারানোর ১৫ মাস পর প্রথম বার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দায় এড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় কার্যত দোষ স্বীকার করলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

Advertisement

গত বছরের ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। সেই থেকে ভারতেই ‘অজ্ঞাতবাসে’ রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই চলতি সপ্তাহের ইমেলে তিন সংবাদমাধ্যম— রয়টার্স, এএফপি এবং দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে প্রথম সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গত বছরের জুলাই-অগস্টের আন্দোলনপর্বে বিপুল প্রাণহানির দায় চাপিয়েছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাঁধে। নাম না করে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন ‘বিদেশি চক্রান্ত’ এবং আন্দোলনকারীদের একাংশের দিকেও।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সুর বদলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দোষের কথাও কবুল করেছেন হাসিনা। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, আপনি কি রাষ্ট্র কর্তৃক সংঘটিত হিংসার জন্য দায় স্বীকার করেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দেশের নেত্রী হিসেবে, আমি চূড়ান্ত ভাবে নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করি।’’ তবে হত্যাকাণ্ডের জন্য আইনরক্ষক বাহিনীকে নিশানা করে এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি নিরাপত্তা বাহিনীকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলাম, এই অভিযোগ মৌলিক ভাবে ভুল।’’ প্রাণহানি বা আইনশৃঙ্খলার আরও অবনতির উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’-এর একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে ‘ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে। হাসিনা অবশ্য সাক্ষাৎকারে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জকে ‘অসত্য তথ্য’ সরবরাহ করেছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া হিসাবের চেয়ে এই তথ্য আশ্চর্যজনক ভাবে বেশি। তা ছাড়া, হতাহতদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরাও রয়েছেন।’’

Advertisement
আরও পড়ুন