Sheikh Hasina

হাসিনার ফোন কল ‘বিশ্লেষণ’! বিদ্রোহ রুখতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার তাঁরই নির্দেশে, দাবি বিবিসির অন্তর্তদন্ত রিপোর্টে

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই গত বছর আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। একটি ফোনালাপের কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ১৯:২৭
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই! প্রকাশ্যে আসা একটি অডিয়ো যাচাই করে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি। গত মার্চ মাসে হাসিনার একটি ফোনালাপের অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসে। সেটি যাচাই এবং বিশ্লেষণ করে বিবিসি জানিয়েছে, হাসিনাই নিরাপত্তা বাহিনীগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার করার জন্য। আন্দোলনকারীদের ‘যেখানে পাবে, সেখানেই গুলি করার’ জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement

গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্রজনতা আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে বাংলাদেশে। প্রথমে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন, সেটিই পরবর্তী সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রূপ নেয়। আন্দোলনের মুখ ছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরাই। ওই আন্দোলনের জেরে পতন হয় হাসিনার সরকারের এবং গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছাড়েন হাসিনা। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ওই আন্দোলনের সময়ে বাংলাদেশে প্রায় ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে হাসিনার বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগে মামলা চলছে। গত মার্চ মাসে ফাঁস হওয়া ওই অডিয়ো ক্লিপটিকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছেন বাংলাদেশের আইনজীবীরা।

যদিও হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্রের দাবি, ওই অডিয়ো ক্লিপটির সত্যতা তারা নিশ্চিত করতে পারছে না। ক্লিপটিতে কোনও ‘বেআইনি উদ্দেশ্য’ বা ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া’ও দেখা যায়নি বলে দাবি ওই মুখপাত্রের।

অডিয়ো ক্লিপটি কে ফাঁস করলেন, কী ভাবে ফাঁস হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফাঁস হওয়া অডিয়ো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সূত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন থেকেই ওই ফোনালাপটি সারেন হাসিনা। বিবিসি জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া ওই অডিয়োর কণ্ঠস্বরের সঙ্গে হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। বিবিসিও পৃথক ভাবে ওই অডিয়োর ফরেন্সিক বিশ্লেষণ করে। তাতে ওই অডিয়ো ক্লিপটি কোনও রকম এডিট বা পরিবর্তন করার প্রমাণ মেলেনি। সেটি কৃত্রিম ভাবে তৈরি হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে দাবি বিবিসির।

ওই ক্লিপটি বিশ্লেষণ করতে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘ইয়ারশট’-এর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেয় বিবিসি। তারা হাসিনার বক্তব্যের ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছেন। তাতে ওই অডিয়োয় কৃত্রিম কোনও পরিবর্তন আনার প্রমাণ মেলেনি বলেই দাবি বিবিসির রিপোর্টে।

Advertisement
আরও পড়ুন