Thailand-Cambodia Border Clash

কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি হয়নি! জানান তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, ভেস্তে গেল মালয়েশিয়ায় শান্তিবৈঠক

বৈঠকের আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই দুই দেশের উচিত সংঘর্ষবিরতিতে পৌঁছোনো। তবে আদৌ তা হয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০০
Thailand Prime Minister Anutin Charnvirakul said that Thailand has not reached a ceasefire agreement with Cambodia

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে সই করেছিলেন তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানেরা। — ফাইল চিত্র।

শান্তি আলোচনা ভেস্তে গেল। তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে কোনও সংঘর্ষবিরতি হয়নি! শনিবার এমনই জানালেন তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইক। তিনি স্পষ্ট জানান, সীমান্তে তাইল্যান্ড সেনা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

Advertisement

গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ার মাটিতেই স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে সই করেছিলেন তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানেরা। তাঁদের মাঝে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই চুক্তি স্থগিত করে আবার দুই দেশ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ইতি টানতে আবারও উদ্যোগী হয় মালয়েশিয়া। তাদের মধ্যস্থতাতেই সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিল তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া। যদিও সেই বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বার হয়নি, তা জানিয়ে দিলেন তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকের আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই দুই দেশের উচিত সংঘর্ষবিরতিতে পৌঁছোনো। তবে আদৌ তা হয়নি। তাইল্যান্ড যুদ্ধ অবসানের জল্পনা উড়িয়ে দিলেও কম্বোডিয়া জানিয়েছে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে এ-ও স্পষ্ট করেছে, তাইল্যান্ডের আক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তুত তারা।

সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই সেনার গুরুতর আহত হওয়ার পরেই গত ১০ নভেম্বর পড়শি দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি মুলতুবি রাখার কথা ঘোষণা করেছিল তাইল্যান্ড। তখন থেকেই নতুন করে সংঘাতের জল্পনা ছড়াতে শুরু করেছিল। সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই দু’তরফের বেশ কয়েক জন সেনা নিহত হয়েছেন। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি থেকে দু’দেশেরই কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া। নতুন করে দুই দেশের মধ্যে সীমান্তবিরোধ চরমে ওঠায় ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলব। কে বলতে পারে, আমার ফোনের পরেই যুদ্ধ থামতে পারে!’’ তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া কর্তৃপক্ষ আদৌ ট্রাম্পের ফোন পেয়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার মধ্যেই সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নিয়ে হওয়া আলোচনা ভেস্তে গেল।

বিতর্কিত ‘পান্না ত্রিভুজ’-এর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে ব্যাঙ্কক-নম পেনের মধ্যে। তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং আর এক পড়শি দেশ লাওসের সীমান্তবর্তী ওই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে) যে রায় দিয়েছিল, তা অনেকটা কম্বোডিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসের শেষপর্বে কম্বোডিয়া সেনা সেখানে শিবির ও পরিখা নির্মাণের তৎপরতা শুরু করার পরে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। জুলাইয়ের গোড়ায় সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া— দুই দেশের সেনাবাহিনী। তাতে দু’তরফেরই বেশ কয়েক জন সেনা ও অসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছিলেন। তার পরে অক্টোবরে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি সই হলেও তা এখন শুধুই খাতায়-কলমে।

Advertisement
আরও পড়ুন