Sanchayer Sahajpath

বিনিয়োগের খুঁটিনাটি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা, ভবিষ্যৎ পথ চলার দিশা দেখাল ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’

বর্ধমান ,দুর্গাপুর ও আসানসোল-এর মানুষদের কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড শেখাল বিনিয়োগের অ-আ-ক-খ।

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩৮
‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’-এর মাধ্যমে বিনিয়োগের অ-আ-ক-খ সহজ কথায় শেখাল ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’

‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’-এর মাধ্যমে বিনিয়োগের অ-আ-ক-খ সহজ কথায় শেখাল ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’

রোজগার তো করে সবাই, সঞ্চয় বা টাকা জমাতেও পারে হয়তো কেউ কেউ। কিন্তু বিভিন্ন খরচ এড়িয়ে টাকাকে বিনিয়োগ করে সঞ্চয় করতে পারে ক’জন? একটু বোঝানো যাক। মাসের প্রথমে পাওয়া বেতন কিংবা রোজগারের টাকা প্রয়োজনীয় নানান খরচ করার পর যেটুকু পড়ে থাকে তা জমানোর জন্য অনেকেই গতানুগতিক সঞ্চয়ের পথে হাঁটে। যেমন ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজ়িট, রেকারিং ডিপোজ়িট, পিপিএফ কিংবা নিদেনপক্ষে পোস্ট অফিসের নানা সেভিংস স্কিম। কিন্তু দিন-দিন জিনিসের দাম, মুদ্রাস্ফীতির পারদ এমন লাফিয়ে বাড়ছে তাকে হারানো তো দূরে থাক শুধু জমানো টাকায় খরচ সামলে ওঠাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। তা হলে উপায়? সাধের বাড়ি কিংবা স্বপ্নের গাড়ি কেনা কি তাহলে অধরাই থেকে যাবে? তা কেন? মিউচুয়াল ফান্ড আছে তো! আজকের এই জেট গতির যুগে গতানুগতিক সঞ্চয়ের পদ্ধতি অচল। কথায় বলে, ‘মানি বেগেট মানি’। টাকাকে ফেলে না রেখে তাকে সঠিক পদ্ধতিতে খাটাতে হবে। তার একটি সহজ উপায় হল মিউচুয়াল ফান্ড। অ্যাক্টিভ বা প্যাসিভ মিউচুয়াল ফান্ডে কী ভাবে, কতদিনের জন্য কী ধরনের স্কিমে ইনভেস্ট করলে আপনি টাকার মুখ দেখবেন, এ বিষয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’ নিয়েছে এক অভিনব উদ্যোগ, ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’, সহযোগিতায় আনন্দবাজার পত্রিকা।

শিলিগুড়ি, কলকাতা-সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত জুড়েই এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সম্প্রতি বর্ধমান, দুর্গাপুর এবং আসানসোলে ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’ আয়োজন করেছিল ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’।

দুর্গাপুরের অর্কিড রেসিডেন্সি, আসানসোলের ফার্ন রেসিডেন্সি এবং বর্ধমানের লায়ন্স ক্লাবে আয়োজিত তিনটি অনুষ্ঠান ঘিরেই বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ ছিল দেখার মতো। বর্ধমান, দুর্গাপুর এবং আসানসোলের অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’-এর ম্যানেজার, সেলস, অরিজিৎ দত্ত। তিনি জানান, “আর্থিক ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতির নিরিখে বিশ্বের মধ্যে ভারতের স্থান অন্যতম। লকডাউনের পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে অর্থ বাজারে আবার অর্থলগ্নীর আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সম্ভাব্য রিটার্নও কিন্তু ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য সরকারী স্কিমের থেকে বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি আশাবাদী, যে ভারতে অর্থলগ্নীর পরিমাণ এবং ইকোনমিক্যাল গ্রোথ বর্তমানে যা আছে আগামী দিনে তার থেকে আরও বেশি বাড়বে। যে ভাবে দেশের সাধারণ মানুষ বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন, তাতে অর্থনীতিবিদ এবং আর্থিক বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন বিনিয়োগের দুনিয়ায় ভারত তার নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাবেই।”

ম্যানেজার, সেলস, অরিজিৎ দত্ত শুধু পরিসংখ্যান দিয়েই অর্থ বাজার এবং তার বৃদ্ধি বোঝাননি, বরং অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিনিয়োগে আগ্রহী মানুষদের খুব সহজে ছোট ছোট উদাহরণ দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড কী? কত ধরনের ফান্ড আছে? লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ, স্মল ক্যাপ, ফ্লেক্সিক্যাপ, মাল্টিক্যাপের সুবিধা- অসুবিধা কোথায়? কত দিনের জন্য কী ভাবে বিনিয়োগ করলে সাধারণ মানুষ তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে? তা সহজেই বুঝিয়ে দেন। তার মুখ থেকে ‘পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং’ ও ‘রুপি কস্ট অ্যাভারেজ’ সম্পর্কে ধারণা পেয়ে উপস্থিত মানুষদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। সঠিক বিনিয়োগ আপনার টাকাকে চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে বাড়িয়ে তুলতে পারে অর্থাৎ সুদের উপর সুদ, একেই ‘পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং’ বলে।

তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “অল্প বয়স থেকে বিনিয়োগ শুরু করলে বেশি সময় পাওয়া যায় এবং লং টার্মে রিটার্ন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। মিউচুয়াল ফান্ডের একটা বড় সুবিধা হল এখানে খুব কম টাকা থেকে বিনিয়োগ করা যায়। যার যেমন ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা তিনি সে ভাবেই বিনিয়োগ করতে পারেন।” সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি)-এর মাধ্যমে কী করে নিয়মিত বিনিয়োগের সু-অভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তিনি সহজ কথায় তা বুঝিয়ে দেন।

সাধারণত সেনসেক্স নেমে গেলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। সে প্রসঙ্গে তাঁর মত, “অর্থ বাজারে ওঠা-নামা থাকবে, কিন্তু ভয় পেলে বা হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না।” মিউচুয়াল ফান্ড কতটা সুরক্ষিত সে প্রসঙ্গে তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া বা সেবি-র সুরক্ষা এবং তত্ত্বাবধানের কথা মনে করিয়ে দেন। বিনিয়োগের রিটার্ন নেওয়ার সময় ট্যাক্স স্ল্যাবের সুবিধা-অসুবিধার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানের শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। মিউচুয়াল ফান্ড কী? মুদ্রাস্ফীতি কী? প্রভৃতি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় উপস্থিত দর্শকদের থেকে। সফল উত্তরদাতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় আকর্ষণীয় পুরস্কার। সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম ভেদ রেখা আছে। সঞ্চয় করলে টাকা জমে, তা বৃদ্ধি পায় না। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক ফান্ডে বিনিয়োগ করলে আপনার টাকা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, মিউচুয়াল ফান্ডই তার প্রমাণ। বিনিয়োগের এই সহজ সত্যিটা মানুষের সামনে তুলে ধরার কাজে ‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’ ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’ উদ্যোগ যে সফল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রশ্ন এবং উত্তর পর্বের বিজয়ীরা এই অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের বক্তব্য রাখেন।

দুর্গাপুরের চিকিৎসক, অতনু মৌলিক জানান, “সঞ্চয়ের সহজপাঠ-এ এসে আমার দারুণ অভিজ্ঞতা হল। যেভাবে উদ্যোক্তারা অনুষ্ঠানটা সাজিয়েছেন তা প্রশংসার দাবী রাখে। আমি নিজে ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে অনেক কিছু শিখলাম।”

এমবিএ-র ছাত্রী স্বস্তিকা সিনহা বলেন, “কলেজে ফাইন্যান্স সম্পর্কে পড়লেও, ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’-এ এসে মিউচুয়াল ফান্ড, এসআইপি নিয়ে অনেক ডিটেল-এ জানতে পারলাম। উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ।”

আসানসোলের বিনিয়োগকারী সূর্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এখানে এসে এটাই বুঝলাম, ইনফ্লেশন নামক দানবের হাত থেকে বাঁচতে আগামী দিনে মিউচুয়াল ফান্ড-এ ইনভেস্ট করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। ‘সঞ্চয়ের সহজপাঠ’-এর উদ্যোক্তাদের আমার অভিনন্দন জানাই।”

আসানসোলের স্টক মার্কেট ট্রেডার, তনয় দত্ত জানান, “আমাদের মধ্যে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি কিন্তু অনেক কম। এরকম অনুষ্ঠানের সঙ্গে জুড়তে পারলে, মানুষ এফডি, আরডি-র বদলে অবশ্যই মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করার দিকে ঝুঁকবে।”

বর্ধমানের বিনিয়োগকারী, শ্রীকান্ত নাগ বলেন, “আমি বহুদিন ধরেই মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করি। এসআইপি এবং মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে যাদের ধারণা ছিলনা তারা তো উপকৃত হলেন, আমিও অনেক জিজ্ঞাসার উত্তর পেলাম। এ ধরনের অনুষ্ঠান আরও যত হবে মানুষ আরও সচেতন হবে।”

বিনিয়োগকারী অর্ঘ দত্ত বলেন, “আমি এই সেমিনারে এসে অনেক কিছু শিখলাম, জানলাম। মিউচুয়াল ফান্ডের বিষয়ে এনারা বিশদে আলোচনা করেছেন। আমার অভিজ্ঞতা খুব ভাল।”

‘কানাড়া রোবেকো মিউচুয়াল ফান্ড’-এর ম্যানেজার, সেলস, অরিজিৎ দত্ত বলেন, “বর্ধমান, আসানসোল এবং দুর্গাপুর, তিনটি জায়গাতেই আমরা বিনিয়োগে উৎসাহী মানুষদের থেকে দারুণ সাড়া পেয়েছি। মানুষজন বেশ আগ্রহ নিয়েই মিউচুয়াল ফান্ড, এসআইপি ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি ওনাদের উত্তর দেওয়ার। ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠান আরও হওয়া উচিত। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ বিনিয়োগের খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে পারবে।”

এটি একটি স্পনসর্ড প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনটি ‘কানাড়া রোবেকো’—এর সঙ্গে এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

আরও পড়ুন