মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের (ডান দিকে) নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দিলেন পার্নো মিত্র (বাঁ দিকে)। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
নতুন বছরে ‘ফুল’ বদলালেন পার্নো মিত্র! ছ’বছর পদ্মফুলে থাকার পরে ২০২৫-এর শেষে তিনি ‘ঘাসফুল’-এ। শিবির বদলেই অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদের দাবি, “মানুষমাত্রেই ভুল করে। সেই ভুল সংশোধনের সময় এসে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে নিজেকে ধন্য মনে করছি।”
শুক্রবার সকালেই শোনা যায়, বিরোধী শিবির ছেড়ে শাসকদলে যোগ দিচ্ছেন পার্নো। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শাসকদলের ঘনিষ্ঠ এক রাজনীতিবিদ খবরের সত্যতায় সিলমোহর দিয়েছিলেন। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ তৃণমূল ভবনে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন অভিনেত্রী। কেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের সিদ্ধান্ত নিলেন পার্নো? সবিস্তার জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। ব্যস্ত অভিনেত্রীর ফোন তখন বেজে গিয়েছে।
যোগদানের পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের বক্তব্য রাখেন সদ্য শাসকদলে যোগ দেওয়া অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “ছ’বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। আপনাদের সে কথা মনে আছে। মনে হচ্ছে, এ বার নিজেকে শুধরে নেওয়া উচিত। সেটাই করলাম।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মকাণ্ড তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁকে দলের অংশ হিসাবে গ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী চন্দ্রিমা, রাজনীতিবিদ জয়প্রকাশ মজুমদারকে। পার্নোর হাতে এ দিন দলীয় পতাকা তুলে দেন চন্দ্রিমা। তাঁর কথাতেও অভিনেত্রীর বক্তব্যের সুর। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আমাদের দলে আসার কথা জানিয়েছিলেন পার্নো। মুখ্যমন্ত্রী দলকে নির্দেশ দিয়েছেন পার্নোকে দলে সংযুক্ত করার।”
বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ছেড়ে অভিনেত্রীর শাসকদলে যোগদান নিয়ে আলোচনা টলিপাড়ায়। ইন্ডাস্ট্রি স্বাগত জানিয়েছে পার্নোর এই পদক্ষেপকে।
পার্নোর অভিনয়জীবন শুরু ২০০৭-এ। ছোটপর্দায় রবি ওঝার ‘খেলা’ ধারাবাহিক দিয়ে শুরু। বড়পর্দায় তাঁকে নিয়ে আসেন অঞ্জন দত্ত। ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ ছবির নায়িকা তিনি। অভিনেত্রীর ঝুলিতে ‘বেডরুম’, ‘মাছ মিষ্টি অ্যান্ড মোর’, ‘রাজকাহিনী’, ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’, ‘অপুর পাঁচালি’, ‘অঙ্ক কী কঠিন’-এর মতো ছবি। ২০১৯-এ পদ্মশিবিরে যোগ দেন তিনি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বরাহনগর নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল। ওই বছরে বিজেপি বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল পায়েল সরকার, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী চক্রবর্তীর মতো একাধিক তারকাকে। ওই নির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থী তাপস রায়ের কাছে পরাজিত হন পার্নো।
নির্বাচনের আগে শাসকদলের বিধায়ক মদন মিত্রের সঙ্গে দোলযাত্রা উদ্যাপনে ‘নৌকাবিহার’ পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন পার্নো। সেই ছবি সেই সময়ের রাজনীতি এবং টলিউডে আলোচনার বিষয় হয়েছিল। এই ঘটনাকে সামনে রেখে ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিরোধী শিবিরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথাগত রায় তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন।