Firecracker Pollution

আলোর বাজিও রাসায়নিকে ঠাসা, ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট বাড়ে শিশুদের, কী কী সতর্কতা নেবেন বাবা-মায়েরা?

একেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া-সহ ভাইরাল ফিভারের দাপট বেশি। এর সঙ্গে বাজির ধোঁয়া নাকে গেলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির টান, কাশি-সহ ফুসফুসের অসুখের প্রবণতা আরও বাড়বে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৫০
Air Pollution rising amid Diwali Celebrations, how to keep kids safe from toxic smoke

বাজির ধোঁয়া শিশুর জন্য বিপজ্জনক, কী ভাবে সতর্ক থাকবেন বাবা-মায়েরা? ছবি: এআই।

কলকাতা-সহ বাংলার নানা জায়গায় বাজির রমরমা বাজার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শব্দবাজি বিক্রি কম হলেও আলোর বাজির তো আর কমতি নেই! কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকাগুলির বাতাস এমনিতেই দূষিত। তার উপরে বাজির ধোঁয়ায় দূষণের ঘনত্ব কয়েক গুণ বেড়ে যাবে আগামী কয়েকটি দিন। একেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া-সহ ভাইরাল ফিভারের দাপট বেশি। এর সঙ্গে বাজির ধোঁয়া নাকে গেলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির টান, কাশি-সহ ফুসফুসের অসুখের প্রবণতা আরও বাড়বে। বিশেষ করে ছোটদের নিয়ে আতঙ্ক বেশি। ছোটরা বাজি পোড়ানোর জন্য বায়না করবেই। তাই কিছু সাবধানতা মেনে চলতেই হবে।

Advertisement

আলোর বাজিতেও ভরপুর রাসায়নিক

বাজির ধোঁয়া থেকে শ্বাসনালির প্রদাহ হওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা। যাঁঁদের ধোঁয়া ধুলোয় অ্যালার্জি বা হাঁপানির প্রবণতা আছে, সিওপিডি, শ্বাসনালির অসুখ আছে, বা বারে বারে অ্যালার্জি জনিত হাঁচি কাশির সমস্যা হয়, তাঁদের বাজির ধোঁয়া থেকে সাবধান থাকতেই হবে। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, ধোঁয়া ও বাজির রাসায়নিক মিলে এমন জগাখিচুড়ি ধোঁয়াশা তৈরি করবে, যা শ্বাসের সঙ্গে টানলেই বিপদ। যখন-তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গুরুতর অসুস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকবে। ছোটদের ক্ষেত্রে এই ধোঁয়া বিপজ্জনক। আলোর বাজিই হোক বা শব্দবাজি, কার্বন আর সালফার তাতে লাগবেই। এ ছাড়াও আর যে সব রাসায়ানিক ব্যবহার করা হয়, সেগুলিও মারাত্মক। যেমন আর্সেনিক, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম অক্সালেট, আয়রন ডাস্ট, অ্যালুমিনিয়াম, সোডিয়াম অক্সালেট, বেরিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম পারকোলেট-সহ আরও অনেক রকম রাসায়নিক থাকে।

বিপদের আশঙ্কা থাকে বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫) থেকেও। কারণ, এই পিএম ২.৫ শুধুমাত্র ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তা কোনও ভাবে মস্তিষ্ক বা হৃদ্‌যন্ত্রে প্রবেশ করে স্ট্রোক এবং হৃদ্‌রোগের কারণ হতে পারে। তাই বাজি যেখানে ফাটছে, তার ধারেকাছে না যাওয়াই ভাল। যদি কোনও কারণে ফুসফুসে সংক্রমণ হয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

বাজির ধোঁয়া থেকে সাবধান থাকবেন কী ভাবে?

শিশুদের মধ্যে ইদানীংকালে হাঁপানির প্রবণতা বেশি। এর কারণই হল পরিবেশের দূষণ। কালীপুজোর ক’টা দিন এই দূষণের পারদ আরও চড়বে, তাই কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে চলতে হবে বাবা-মায়েদের। এই বিষয়ে সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের বক্তব্য, হাঁপানি বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস জাতীয় অসুখ থাকলে বাজি পোড়ানোর জায়গায় না যাওয়াই ভাল। যেখানে বাজি পুড়ছে, সেখানে শিশুকে যেতে দেবেন না। দূর থেকে দেখারও প্রয়োজন নেই। কারণ দূষিত কণা খুব দ্রুত বাতাসে ছড়িয়ে যায়। দরজা-জানলা আটকে রাখাই ভাল।

বাজি পোড়াতে হলে প্যাঁকাঠির আগায় ফুলঝুরি, রংমশাল-সহ অন্যান্য আলোর বাজি জ্বালাতে হবে। সাপবাজির ধোঁয়া ভয়ানক মারাত্মক। এই বাজি ছোটদের কিনে দেবেন না।

বাজি যেখানে পুড়ছে সেখান দিয়ে যেতে হলে মুখে মাস্ক পরাই ভাল। বাজি পোড়ানোর সময়ে নাক-মুখ সুতির কাপড় দিয়ে ভাল করে বেঁধে নিতে হবে। শিশুর যদি শ্বাসকষ্টের ধাত থাকে তা হলে, অল্প ভিজে কাপড় নিয়ে নাক চেপে রাখলে কষ্ট কম হবে।

সবুজ বাজিতে রাসায়নিকের মাত্রা যেহেতু কম, তাই এতে বিপদ কম। তবে বাজার থেকে যে সবুজ বাজি কিনছেন তা আসল না ভুয়ো তা যাচাই করে নিতে হবে। তবে যে কোনও বাজিই ফুসফুসের জন্য বিপজ্জনক।

Advertisement
আরও পড়ুন