৯৯ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক হয় মূলত চার কারণে! সেগুলি কী কী? বিপদ এড়াতে সতর্ক থাকার পরামর্শ গবেষকদের

দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষকেরা হৃদ্‌রোগ হওয়ার মূল চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ওই চার কারণের জন্যই হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৮
New study reveals the major 4 risk Factors of Heart Attack, how to prevent them

হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণ কী কী? ছবি: ফ্রিপিক।

এমনিতে সুস্থ-সবল মানুষ। কোনও রোগ-অসুখ নেই। আচমকাই একদিন বুকে ব্যথা, তার পর ধরা পড়ল হার্ট অ্যাটাক। এমন ঘটনা আকছারই ঘটছে। হৃদ্‌রোগ অনেক সময়েই বলেকয়ে আসে না। হার্টের ধমনীতে নিঃশব্দে রক্ত জমাট বাঁধছে কি না, তা বোঝে কার সাধ্য। বুকে ব্যথা নেই, রাতে শুয়ে ঘামও হয় না, অন্যান্য যে ভীতিকর লক্ষণের কথা বলা হয়, তা-ও নেই। এর পরেও ধরা পড়তে পারে হৃদ্‌রোগ। অথবা আচমকাই হার্ট অ্যাটাকে বিপদ ঘনাতে পারে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণ অনেক। তবে দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষকেরা হৃদ্‌রোগ হওয়ার মূল চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ওই চার কারণের জন্যই হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়।

Advertisement

হার্ট অ্যাটাকের মূল চার কারণ:

উচ্চ রক্তচাপ

উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভারতে প্রতি বছর ১০ লক্ষেরও মানুষ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত হন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্ট্রোক বা হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। একটা সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একজন সুস্থ ব্যক্তির রক্তচাপের স্বাভাবিক মাপ হিসেবে ১২০/৮০-কে নির্দিষ্ট করে। পরে জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই অঙ্কই তারা বাড়িয়ে করে ১৩০। সম্প্রতি প্রকাশিত আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা অনুযায়ীও এই মাপকে ১৩০ ধরা হয়েছে। তবে এর বেশি হওয়া মানেই বিপদ। তখন রক্তবাহী ধমনীর উপর চাপ বাড়ে। ফলে হার্টের স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে।

উচ্চ কোলেস্টেরল

কোলেস্টেরলের ভাল ও মন্দ দুই-ই আছে। মন্দ কোলেস্টেরলের ফাঁদে পড়লেই হার্টের মতিগতি বদলে যায়। বিগড়ে যায় তার ছন্দ। খারাপ কোলেস্টেরল বাড়লে রক্তনালির মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ে। আর রক্ত জমাট বাঁধলে হৎস্পন্দন অনিয়মিত হবেই। তখন হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।

রক্তে অধিক শর্করা

রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে থেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে, যাকে বলে ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সঙ্কীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে। এই ব্লকেজ থেকেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে।

অতিরিক্ত ধূমপান

অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে শরীরের নানা ভাবে ক্ষতি হয়। ধূমপানের কারণে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। যে কারণে ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এর ফলে হৃৎপিণ্ড আর মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। সঙ্গে রক্তনালিতে চর্বি, খারাপ কোলেস্টেরল এবং ক্যালশিয়াম জমতে থাকে। যে কারণে রক্তনালির দেওয়াল পুরু হতে থাকে যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

হার্ট ভাল রাখতে তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তে শর্করা যাতে না বাড়ে, সে কারণে রোজের খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। সুষম আহার জরুরি, পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চাও প্রয়োজন। হার্টের রোগ তলে তলে মাথাচাড়া দিচ্ছে কি না, তা নির্ণয় করার অনেকগুলি পরীক্ষা আছে, যেমন— অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম, ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাম, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, স্ট্রেস টেস্ট, কার্ডিয়াক এমআরআই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেই সব পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন