ঘরোয়া খাবার খেয়ে নির্মেদ এবং সুস্থ থাকা যায়। বি টাউনের নায়িকা করিনা কপূরও কিন্তু ভাত-ডাল খান। ছবি: সংগৃহীত।
খেতে হবে পুষ্টিগুণ জেনে এবং মেনে। গত কয়েক বছরে সমাজমাধ্যমের দৌলতে এ কথা জেনে গিয়েছেন প্রায় সকলেই। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে ফিটনেস প্রশিক্ষক, পুষ্টিবিদেরা বলছেন, সুস্থ এবং সুন্দর থাকার রহস্য লুকিয়ে পুষ্টিতেই। এ নিয়ে যতই আলোচনা বাড়ছে, ততই অচেনা খাবার জায়গা করে নিচ্ছে প্রাতরাশ থেকে নৈশভোজের পাতে।
চিরপরিচিত রুটি, ভাত, ডালিয়া— এ সব ব্রাত্য। বদলে কিনোয়া, ওট্স, সিরিয়াল, মুজ়লির রমরমা বাজার। এখন লোকে মেথি ভেজানো বা মৌরি ভেজানো জল নিয়ে যত না কথা বলেন, তার চেয়ে বেশি নজর দেন তিসির বীজ ভেজানো জল, চিয়া বীজে। সকালের জলখাবারে জায়গা করে নিচ্ছে বিভিন্ন রকম বাদাম, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি স্মুদি।
তবে পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর এর কোনওটি খেতে বলছেন না। বরং মহিলাদের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে, সৌন্দর্য বজায় রাখতে তিনি জানাচ্ছেন, যে খাবার এত দিন সকলে খেয়ে এসেছেন, যা খেয়ে সকলে অভ্যস্ত, তাতেই ভরসা রাখতে। রুজুতা মুম্বইয়ের তারকা মহলে পরচিত নাম। করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ হিসাবে তিনি জনপ্রিয় হন। সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই ওজন কমানো, স্বাস্থ্রক্ষা-সহ নানা বিষয়ে তাঁর মতামত ভাগ করে নেন তিনি।
রুজুতাই জানান, সুস্থ থাকলে সাধারণ ডায়েট যথেষ্ট। মহিলাদের রজোনিবৃত্তির সময় এবং তার আগের অধ্যায়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় হরমোনের হেরফের হয়। তার প্রভাব পড়ে শরীর এবং মেজাজে। এই সময় অনেকেই হঠাৎকরে স্থূল হয়ে যান, কোমরে, পেটে চর্বি জমতে থাকে। নানা রকম বদল দেখা দেয় শরীর এবং মনে।
এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় রুজুতা যেমন বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবে দেখতে বলছেন, তেমনই দৈনন্দিন খাবারেও জোর দিতে বলছেন। তিনি বলছেন তিনটি জিনিস।
প্রাতরাশ জরুরি: সকালের খাবারটি কোনও ভাবেই যেন বাদ না পড়ে বলছেন পুষ্টিবিদ। কী খেতে হবে, সেটা তিনি বলেননি। বরং ঘরোয়া খাবারেই ভরসা রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘যা সহজে বানানো যায়, হেঁশেলে কোন জিনিস হাতের কাছে রয়েছে, সেটা বুঝে খাবার বানিয়ে নিলেই হবে।’’ তবে রুজুতা উল্লেখ না করলেও, তিনি ভাজাভুজি বা অস্বাস্থ্যকর কোনও খাবার খেতে বলেননি।
চিনেবাদাম: স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা— এ সব নিয়ে লোকে মাথা ঘামান। কিন্তু এত দিন লোকে যা খেতেন, সেটাই খেতে বলেছেন তারকাদের পুষ্টিবিদ। সেটি হল চিনেবাদাম। আগেকার দিনে যাঁরা শরীরচর্চা করতেন, তাঁরা সকালে ছোলা-বাদাম ভেজানো খেতেন। সেই চিনেবাদামই শরীরে পুষ্টি জোগানের জন্য যথেষ্ট, মত রুজুতার। কারণ, এই খাবার অন্য বাদামের চেয়ে সস্তা। সমস্ত লোকেই খেতে পারবেন। বাদাম খেলে শরীর ক্যালশিয়াম পাবে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও ভাল থাকবে।
নৈশভোজ: মাছ, মাংস, ডিম নয়, বরং খুব সাধারণ খাবার ডাল-ভাতেই আস্থা রেখেছেন রুজুতা। তাঁর কথায়, ভাত-ডাল খেলে চট করে হজম হবে। পেটফাঁপার সমস্যাও থাকবে না। রাজমা, ছোলা, মুগ, মুসুর— যে কোনও ডাল খেতে বলছেন তিনি। চাইলে রাখা যেতে পারে ছাঁস। দইয়ের পাতলা ঘোল বা নোনতা ছাঁস পেটের জন্য ভাল। এতে প্রোবায়োটিক থাকায় পেটের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।