Tea with Biscuits

শিঙাড়া-জিলিপির মতো চায়ের সঙ্গে বিস্কুটেও ‘না’, বাঙালির সকাল-সন্ধ্যার চায়ের সঙ্গে ‘টা’ তবে কী হবে?

চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া যে খারাপ, এই বিষয়টি নিয়ে আগেও বহু বার চর্চা হয়েছে। আর এখন এই বিষয়টিই দায়িত্ব নিয়ে প্রচার করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫৪
Is Tea with Biscuit good for health, Government launches warning boards at snack counters in Nagpur

সকাল-সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে বিস্কুট দারুণ ক্ষতিকর, সতর্ক করলেন চিকিৎসকেরা। ফাইল চিত্র।

সাত সকালের চায়ের সঙ্গে মুচমুচে বিস্কুট না হলে কি আর জমে! বাঙালির সকাল ও সন্ধ্যার চায়ের সঙ্গে বিস্কুট চাই-ই চাই। সে মিষ্টি হোক, নোনতা বা জিরে বিস্কুট। গরম চায়ের সঙ্গে ‘টা’ বলতে চপ বা শিঙাড়া বাদে বিস্কুটের নামই আগে আসে। আবার চায়ের আড্ডায় শৌখিন কুকিজ়, ক্রিম ভরা বিস্কুট বা কেক দিব্যি চলছে বহু কাল ধরেই। আর এখানেই হচ্ছে ক্ষতি। চায়ের সঙ্গে যেমন চপ-শিঙাড়া বা পকোড়া খাওয়া অস্বাস্থ্যকর, তেমনই বিস্কুটও। চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া যে খারাপ, এই বিষয়টি নিয়ে আগেও বহু বার চর্চা হয়েছে। আর এখন এই বিষয়টিই দায়িত্ব নিয়ে প্রচার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘অয়েল অ্যান্ড ফ্যাট বোর্ড’-এর অস্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় যেমন চপ, শিঙাড়া, জিলিপির নাম আছে, তেমনই রয়েছে চায়ের সঙ্গে বিস্কুটও।

Advertisement

নাগপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যান্টিনে ক্যান্টিনে বিজ্ঞপ্তি সাঁটা হয়েছে। ভাজাভুজি, চপ, শিঙাড়া ইত্যাদি বিক্রি করলে তার কোনটিতে কতটা শর্করা, কী পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট আছে, তা জানাতে হবে। যদিও সরকার জানিয়েছে, কোনও কিছুতেই নিষেধাজ্ঞা নেই, কেবল নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। তেমনই বিস্কুটও। হালকা স্ন্যাক্স বলে মনে হলেও বিস্কুট তৈরি হয় ময়দা দিয়ে। তাতে ঠাসা ট্রান্স ফ্যাট। ক্রিম ভরা বিস্কুটে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা আরও বেশি। কাজেই গরম চায়ের সঙ্গে ওই বিস্কুট খেলে তা পেটে গিয়ে গোলমাল বাধাতে বাধ্য। দিনের পর দিন অতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট শরীরে গেলে রক্তে কোলেস্টেরলও বাড়বে। সেই সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়বে ট্রাইগ্লিসারাইড। আর এ সবের হাত ধরেই মেদ জমতে থাকবে।

এমসের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া কতটা ক্ষতিকর, তা নির্ভর করে বিস্কুটের ধরন, এর উপাদান এবং আপনি কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন, তার উপর। মিষ্টি বা নোনতা বিস্কুট নৈব নৈব চ। অনেকেই ভাবেন, জিরে দেওয়া বিস্কুট ভাল। তবে তাতেও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা বেশি থাকে। অতিরিক্ত চিনিও থাকে। আসলে বিস্কুটে থাকে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট, যাতে ফাইবার ও খনিজ উপাদানগুলি থাকে না। বার বার প্রক্রিয়াকরণের কারণে ফাইবার ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানগুলি বেরিয়ে যায়। যা থেকে যায়, তা হল শর্করা। তাতে যেটি তৈরি হয়, তা সহজপাচ্য হলেও স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। অনেক বিস্কুটে স্বাদ বাড়ানোর জন্য ‘হাইড্রোজেনেটেড ভেজিটেবল অয়েল’ বা মার্জারিন ব্যবহার করা হয়, যা ট্রান্স ফ্যাটে ভরপুর। বেশি খেলে হার্টের রোগ হতে বাধ্য। ওজনও বাড়বে অবধারিত ভাবেই।

আসলে দেশে যে হারে স্থূলত্ব ও ডায়াবিটিস বাড়ছে, তাতে খাওয়াদাওয়ায় লাগাম পরানোর কথাই ভাবা হচ্ছে। ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালের সমীক্ষা বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে স্থূলত্ব বিশ্ব জুড়েই মহামারির আকার নেবে। ভারত, চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাকবে তালিকার প্রথম দিকে। যার মধ্যে ভারতের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ স্থূলত্বের সমস্যায় ভুগবেন। এই সমস্যা যাতে বড় আকার না নেয়, সে কারণেই ময়দা, চিনি দেওয়া খাবারে রাশ টানার কথা বলা হচ্ছে। তবে বিস্কুটের বিকল্প হিসাবে মুড়ি, ছোলা সেদ্ধ, রোস্টেড মাখানার মতো খাবার হাতের কাছে রাখাই ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন