Viral Fever Remedies

শীতের শুরুতে ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর, কাশি সারছে না, বদলাচ্ছে গলার স্বরও, তিন দিনে না কমলে কী করণীয়?

ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর, গলা ব্যথা সারতে চাইছে না। শুকনো কাশি ভোগাচ্ছে। কেন এত জ্বর বাড়ছে? কী কী পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:১৭
Seasonal Viral fever rises, what are the symptoms and how to prevent it

কলকাতায় ঠান্ডা পড়তে না পড়তেই জ্বর, গলা ব্যথা, কারণ কী? ফাইল চিত্র।

কলকাতায় ঠান্ডা পড়তে না পড়তেই ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর। শুকনো কাশি সারতে চাইছে না। গলার স্বর বদলে যাচ্ছে। জ্বর কমে গেলেও ক্লান্তি যাচ্ছে না। শরীর যেন একটু বেশিই দুর্বল হয়ে পড়ছে। জ্বর মানেই মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলা নয়, এমনই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই ধরনের জ্বর সাধারণত দুই থেকে তিন দিন থাকছে। তবে যদি জ্বর, গা ম্যাজেম্যাজে ভাব তিন দিনের বেশি থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল।

Advertisement

কেন এত জ্বরের প্রকোপ?

তাপমাত্রার পারদ নামার সঙ্গে সঙ্গে এক শ্রেণির ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। সর্দি-জ্বরের অ্যাডিনোভাইরাস তো আছেই, সেই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রোটাভাইরাসের মতো জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। এই বিষয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে শ্বাসনালির উপরের অংশে প্রদাহ হয়। সে ক্ষেত্রে সর্দি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। গলা ভেঙে যেতে পারে, গলার স্বরে বদল আসতে পারে। তবে এখন যে ধরনের জ্বর বা গলা ব্যথার প্রকোপ বেড়েছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস নয়, সেই ধরনের আরও কিছু ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। শীতের সময়ে বাতাসে ধূলিকণা বেশি থাকে। তার উপর বাতাসে আর্দ্রতাও কম থাকে। তাই বাতাসে ভাসমান ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ভাইরাস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে সহজে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সে কারণেই এত জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে।

গলা ব্যথা সারছে না

গলা ব্যথা ও অল্প জ্বর মূলত টনসিলাইটিস ও ফ্যারেঞ্জাইটিসের উপসর্গ। নাকের ঠিক পিছনেই শ্বাসনালির সামনে থাকে টনসিল আর ফ্যারিংস। বাইরের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে গেলে তাদের সঙ্গে লড়াই করে। টনসিল জীবাণুদের শ্বাসনালিতে ঢুকতে বাধা দেয়। কিন্তু অনেক সময় জীবাণুদের কাছে এরা যুদ্ধে হেরে গিয়ে নিজেরাই আক্রান্ত হয়ে পড়ে। আর সংক্রমিত মানুষের হাঁচি, কাশি বা কথা বলার মাধ্যমে এই জীবাণুগুলি ছড়িয়ে পড়ে খুব দ্রুত। নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে টনসিল ও ফ্যারিংসে প্রদাহ ঘটায়। ফলে শুকনো কাশি ভোগাতে থাকে, গলার স্বর ভেঙে যায়।

ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ থেকে বাঁচার উপায় কী?

তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে সেই সঙ্গে শুকনো কাশি সারতে না চাইলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক।

জ্বর আর গলা ব্যথা থাকলে ব্যথা কমানোর ওষুধ খাওয়া চলবে না। শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ও গরম জলে গার্গল এবং প্রয়োজন হলে ভেপার নিতা হবে।

গলা ব্যথা সারতে না চাইলে বা টনসিলের সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ছোঁয়াচে এই অসুখের হাত এড়াতে ভিড় বাজার দোকান বা বাসে ট্রেনে নাক মুখ ঢেকে রাখাই সব থেকে ভাল উপায়। কোভিডের সময়ে যে মাস্ক পরার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল, তা ফিরিয়ে আনতে পারলে সংক্রামক এই সব অসুখ থেকে বাঁচা সম্ভব।

জ্বরের সময়ে ভাত, ডাল, দুধ, রুটি, চিকেন বা সব্জির স্ট্যু, ডিম— সবই খাওয়া যায়। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এসি ব্যবহার, ঠান্ডা জল বা বোতলবন্দি ঠান্ডা পানীয় না খাওয়াই ভাল।

অনেক সময় গলা ব্যথা হলে গলা জুড়ে সাদাটে প্যাচ দেখা যায়। যদি গলার এক দিকে প্যাচ থাকে, তবে অবশ্যই থ্রোট সোয়াব পরীক্ষা করাতে হবে। যদি জ্বর তিন দিনের বেশি থাকে, তা হলে টিসি-ডিসি, হিমোগ্লোবিন টেস্ট, ম্যালারিয়া অ্যান্টিজেন ডিটেকশন টেস্ট, এনএস ১ অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পিসিআর বা র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করিয়ে রাখা ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন