Donald Trump Disease

রক্ত জমছে পায়ে, কাঁপছে হাত, অকেজো হচ্ছে শিরা-উপশিরা, কী রোগে ভুগছেন ট্রাম্প?

শিরার রোগ খুব জ্বালাচ্ছে ৭৯ বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কী রোগে ভুগছেন?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৫ ১৩:২২
US President Donald Trump was recently diagnosed with Chronic Venous Insufficiency, what is that health condition

জটিল রোগে ভুগছেন ৭৯ বছরের ট্রাম্প, কী অসুখ হল? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শরীরের সমস্ত শিরা-উপশিরায় কাঁপুনি ধরেছে। কাজ করতে গেলেই ঠকঠক করে কাঁপে হাত। বসে থাকলে ফুলে যায় পা। শিরার রোগ খুব জ্বালাচ্ছে ৭৯ বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। অসুখ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, হাসপাতালে ভর্তি করে নানা পরীক্ষানিরীক্ষাও করাতে হয় আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে। তবে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানসার হয়নি ট্রাম্পের। বরং শিরা-উপশিরার অসুখ ‘ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি’ রোগে ভুগছেন তিনি।

Advertisement

কী এই ‘ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি’ রোগ?

এই রোগে শিরা ফুলে যায়। বয়সকালে এই রোগ হয় অনেকের, আবার ওজন বেশি হলেও হতে পারে। শিরার ভিতর যে ভা্ল্‌ভ বা কপাটিকা থাকে, সেগুলি অকেজো হতে শুরু করে। ফলে শিরার যা কাজ অর্থাৎ, রক্ত হার্টে বয়ে নিয়ে যাওয়া, সেই কাজ ঠিকমতো হয় না। তখন রক্ত উপর দিকে না গিয়ে পায়ে গিয়ে জমতে থাকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই পা ফুলে যায়। পায়ের শিরাগুলি দু’টি সারিতে বিভক্ত থাকে। এই দু’টি সারির সংযোগকারী অংশে থাকে আন্তঃশিরা। এই শিরাগুলির মধ্যে একমুখী ভাল্‌ভ রয়েছে। অর্থাৎ এই শিরাগুলির মধ্যে রক্ত এক দিকেই প্রবাহিত হতে পারে। রক্তপ্রবাহের সময়, কোনও কারণে যদি শিরার মধ্যে থাকা ভাল্‌ভ ঠিকমতো কাজ না করে বা দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন রক্ত বিপরীত দিকে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এবং শিরাগুলি ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে। কখনও চামড়া ঠেলে বেরিয়েও আসতে থাকে। এই রোগকে বলে ‘ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি’। এতে পা ফুলে যাওয়া, পায়ে আলসার হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

একই দশা হতে পারে হাতের ক্ষেত্রেও। হাতের শিরা বেয়ে রক্ত হার্টে যেতে না পারলে, সেখানেই ডেলা পাকিয়ে জমতে থাকবে। ফলে হাতের পেশি দুর্বল হতে থাকবে। তখন কিছু ধরতে গেলে বা কাজ করতে গেলে কাঁপুনি হবে হাতে।

কাদের হয় এই রোগ?

ওজন যদি খুব বেড়ে যায়, তা হলে পেশিতে চাপ বাড়ে। শিরা-উপশিরাগুলির ক্ষমতা কমতে থাকে। তখন এই কাঁপুনি রোগ হতে পারে। আবার বয়সকালে শরীরের শক্তি কমে গেলে তখন এমন রোগ হয় অনেকের। সত্তরোর্ধ্বদের এমন রোগ হয়েই থাকে।

দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলেও শিরার উপর চাপ পড়ে। তখন রক্তজালিকাগুলি অকেজো হতে শুরু করে। একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের হাত-পা ফুলে যাওয়া, ঘন ঘন কালশিটে পড়া বা গোড়ালি ফোলা, কাঁপুনি হতে পারে। পেশির খিঁচুনি হওয়াও এই রোগের লক্ষণ।

কোন কোন লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

হাতে ও পায়ে সব সময়ে ব্যথা, হাত কাঁপা, গোড়ালি ফুলে যাওয়া দেখে বুঝতে হবে, গোলমাল শুরু হয়েছে। হাত ও পায়ের চামড়ার রং বদলে যেতে পারে। বিশেষ করে কনুই, গোড়ালির রং লালচে খয়েরি হয়ে যেতে পারে। ত্বক খসখসে হয়ে যাবে, আঁশের মতো ছালও উঠতে পারে।

পেশিতে মাঝেমধ্যেই ব্যথা হবে, টান ধরবে। বিশেষ করে রাতে শুয়ে পায়ে ব্যথা হবে। রোগ যদি অল্প হয়, তা হলে তেমন সমস্যা হবে না। তবে বেড়ে গেলে পায়ের আলসার দেখা দিতে পারে। আবার ‘ভেরিকোজ় ভেন’-এর মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এতে পায়ের শিরা-উপশিরাগুলি স্পষ্ট হয়ে চামড়ার উপর ফুটে ওঠে। শিরাগুলি ফুলে ওঠার পরে ত্বকের উপরে গাঢ় বেগুনি বা নীল রঙের শিরার আঁকাবাঁকা রেখা দেখা যায়। পরবর্তী কালে পায়ের মাংসপেশিতে টান অনুভূত হতে থাকে। এমনকি, পায়ের পাতায় শক্ত পিণ্ড দেখা দেয়। সেখানে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

জীবনযাত্রা্র বদল ঘটালে এই রোগের উপশম হতে পারে। এর জন্য শরীরচর্চা করা জরুরি। ওজন কমাতে হবে। একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা চলবে না। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন