Risks of Alarm Sound

অ্যালার্মের বিকট আওয়াজে সকালে ঘুম ভাঙে? গুরুতর রোগের আশঙ্কা, জানাচ্ছেন চিকিৎসক

অ্যালার্মের আকস্মিক, তীব্র, কৃত্রিম শব্দ আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘুমের মধ্যে। অনেকেই বুঝতে পারেন না, অ্যালার্মের শব্দই দিনের প্রথম শব্দ, যা স্নায়ুতন্ত্রে গিয়ে পৌঁছোয়। আর ও রকম আওয়াজ শুনে স্নায়ুতন্ত্র যে বার্তাটি শরীর ও মনকে পাঠায়, তা হল— আতঙ্কিত হতে হবে এখনই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩৫
অ্যালার্মের আকস্মিক, তীব্র, কৃত্রিম শব্দ আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘুমের মধ্যে।

অ্যালার্মের আকস্মিক, তীব্র, কৃত্রিম শব্দ আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘুমের মধ্যে। ছবি: সংগৃহীত।

অন্ধকার পেরিয়ে দিনের আলোয় পা। সকাল মানেই নতুনের, সুন্দরের আশা। আর তাই ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে তুলনা করা হয়, পুরনো খারাপ স্মৃতি ভুলে নতুন কিছুর শুরুকে। সেই সূচনার সময়ে শান্তির প্রয়োজন। কিন্তু যদি রোজ বিকট কোনও আওয়াজ আপনাকে সুনিদ্রা থেকে তুলে দুঃস্বপ্নের দিকে নিয়ে যায়? কারই বা ভাল লাগে!

Advertisement

আপনার ঘড়ির বা ফোনের অ্যালার্ম খানিক সেই কাজই করে সকাল সকাল। মধুর শান্ত সুরের বদলে একটু উচ্চ ডেসিবেলের বিকট আওয়াজই পছন্দ করেন অনেকে। তাতে অনেক সহজে সজাগ হওয়া যায়। তবে কেবল বিরক্তি উৎপাদন নয়, অ্যালার্ম কিন্তু আরও গুরুতর ক্ষতি করতে পারে আপনার।

অ্যালার্মের আকস্মিক, তীব্র, কৃত্রিম শব্দ আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘুমের মধ্যে। অনেকেই বুঝতে পারেন না, অ্যালার্মের শব্দই দিনের প্রথম শব্দ, যা স্নায়ুতন্ত্রে গিয়ে পৌঁছোয়। আর ও রকম আওয়াজ শুনে স্নায়ুতন্ত্র যে বার্তাটি শরীর ও মনকে পাঠায়, তা হল— আতঙ্কিত হতে হবে এখনই। ফলে তখন আপনি কেবল ঘুম ভেঙে জেগে উঠছেন না, আপনার শরীর একটা ধাক্কা পেয়ে সজাগ হয়ে যাচ্ছে। যেন খারাপ কিছুর জন্য প্রস্তুত হতে হচ্ছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, এই রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে গেলেও, এটি আদপে স্বাভাবিক নয়।

অ্যালার্মের কৃত্রিমতা ছেড়ে প্রাকৃতিক উপায়ের সাহায্যে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বিকট আওয়াজ নয়, প্রকৃতির ছোঁয়ায় অর্থাৎ, পাখির ডাক বা সূর্যালোকে ঘুম ভাঙা উচিত। সূর্যালোকের আলোর সঙ্গে ঘুম থেকে ওঠাই স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় নিয়ম। এর ফলে আপনার কর্টিসল অর্থাৎ স্ট্রেস হরমোন স্বাভাবিক হয়, হজমপ্রক্রিয়া উন্নত হয়, মেজাজ ভাল থাকে।

বিকট আওয়াজ নয়, প্রকৃতির ছোঁয়ায় অর্থাৎ, পাখির ডাক বা সূর্যালোকে ঘুম ভাঙা উচিত।

বিকট আওয়াজ নয়, প্রকৃতির ছোঁয়ায় অর্থাৎ, পাখির ডাক বা সূর্যালোকে ঘুম ভাঙা উচিত। ছবি: সংগৃহীত।

সেই জায়গায় যন্ত্রকে এনে বসালে শরীরের ছন্দ নষ্ট হয়। তার ফলে নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয়। হায়দরাবাদের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক সুধীর কুমার জানাচ্ছেন, অ্যালার্ম বাজিয়ে ঘুম থেকে ওঠার ফলে রক্তচাপ অ্যালার্ম ছাড়াই যাঁরা ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁদের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। চিকিৎসক জানালেন, ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া স্কুল অফ নার্সিং (ইউভিএ স্কুল অফ নার্সিং)-এর জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘যাঁরা ৭ ঘণ্টারও কম ঘুমিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই অ্যালার্ম বাজার বিষয়টা আরও ক্ষতিকারক। রক্তচাপ বৃদ্ধির হার বেশি। আর রক্তচাপের এই বৃদ্ধি হার্ট-অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। যাঁদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আরও বিপজ্জনক।’’

প্রতি দিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠলে ধীরে ধীরে শরীরও নিজের মতো করে রুটিন তৈরি করে নেয়। তখন আর অ্যালার্মের প্রয়োজন পড়ে না। তাই রোজ একই সময়ে ঘুমোনো আর ওঠা অভ্যাস করলে, শরীর তার মতো করে খাপ খাইয়ে নেবে।

Advertisement
আরও পড়ুন