— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে পা দিয়ে দু’কোটি টাকা খোয়ালেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত এক যুবতী। ‘পুলিশ’কে টাকা দিতে বিক্রি করে দিতে হল ফ্ল্যাট এবং জমিও! চলতি বছরের মাঝামাঝি কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবতীর নাম ববিতা দাস। বেঙ্গালুরুর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করতেন তিনি। বিজ্ঞাননগরের একটি ফ্ল্যাটে ১০ বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ববিতা। চলতি বছরের জুন মাসে তাঁর কাছে একটি উড়ো ফোন আসে। অপরপ্রান্ত থেকে নিজেকে কুরিয়ার সংস্থার কর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ববিতার আধার কার্ডের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে এমন একটি সন্দেহজনক পার্সল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর পর ওই ব্যক্তি কলটি ‘মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিক’-এর কাছে ফরওয়ার্ড করেন। সবটাই ছিল সাজানো। পুলিশের ওই আধিকারিক ববিতাকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বাড়ির বাইরে বেরোতেও নিষেধ করা হয়।
এর পর ববিতাকে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ ইনস্টল করতে বলেন প্রতারকেরা। ভয়ে সে কথা মেনে চলেন ওই যুবতী। অ্যাপ ইনস্টল করামাত্রই যুবতীর ফোন প্রতারকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এর পর ববিতাকে বলা হয়, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে কিছু টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাঠাতে হবে তাঁকে। সেই টাকা জোগাড় করতে তড়িঘড়ি মাল্লুরের দু’টি জমি কম দামে বিক্রি করে দেন ওই যুবতী। পরে তাঁর বিজ্ঞাননগরের ফ্ল্যাটটিও বিক্রি করে দেন। তাতেও সব টাকা না জোগাড় হলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে হয় তাঁকে। তার পর দফায় দফায় সেই টাকা প্রতারকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান ববিতা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ভাবে সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা খুইয়েছেন ওই যুবতী। পরে প্রতারকেরা তাঁকে বলেন, নিকটবর্তী থানায় গিয়ে টাকা ফেরত চেয়ে নিতে। এর পর ফোন কেটে দেওয়া হয়। তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। তখনই মহিলা বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি হোয়াইটফিল্ড সাইবার অপরাধ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ববিতা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খোয়া যাওয়া টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।