—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অনুপ্রবেশকারী রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংসদে তথ্য দিয়ে এমন দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে কত জন গ্রেফতার হয়েছেন, তার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তিনি। একই সঙ্গে ২০২৫ সালের তথ্যও আলাদা করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
অনুপ্রবেশ নিয়ে তৃণমূলের দুই সাংসদ জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া এবং শর্মিলা সরকারের প্রশ্নে নিত্যানন্দ জানান, ২০১৪ সাল থেকে ভারত-চিন সীমান্তে কোনও অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, নেপাল এবং ভুটান দিয়ে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করেছে কেন্দ্র। ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অনুপ্রবেশের কারণে ভারতের সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ২৩ হাজার ৯২৬ জন।
লোকসভায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনুপ্রবেশ সন্দেহে সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। তার পরেই রয়েছে মায়নমার সীমান্ত। এ ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল এবং ভুটান সীমান্ত দিয়েও অনুপ্রবেশের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
সংসদে নিত্যানন্দ জানিয়েছেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, নেপাল এবং ভুটান দিয়ে অনুপ্রবেশের কারণে গ্রেফতার হয়েছেন ২০ হাজার ৮০৬ জন। আর ২০২৫ সালে জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ৩,১২০ জন। কোন দেশের সীমান্তে কত অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার তথ্যও সংসদে দেওয়া হয়েছে।
তথ্য অনুসারে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। ১৮, ৮৫১ জনকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। ভারত-মায়নামার সীমান্তে ১,১৬৫ জন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ৫৫৬ জন এবং ভারত-নেপাল-ভুটান সীমান্তে ২৩৪ জনকে ধরেছে নিরাপত্তাবাহিনী। তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢোকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ২,৫৫৬ জন। ভারত-পাকিস্তান (৪৯), ভারত-মায়ানমার (৪৩৭) এবং ভারত-নেপাল-ভুটান সীমান্তে (৭৮) অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। অনুপ্রবেশ নিয়ে বার বার বিরোধীদের তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। দিনকয়েক আগে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের একহাত নিয়েছিলেন। তিনি জানান, অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করে এমন কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষেই থাকেন না দেশের নাগরিকেরা! তাঁর দাবি, দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতেই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) করা হচ্ছে। অভিযোগ, বিরোধীদের ভোটব্যাঙ্ক এই অনুপ্রবেশকারীরা! তবে বিরোধীরাও অনুপ্রবেশ নিয়ে কেন্দ্রকেই কাঠগড়ায় তোলে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, অনুপ্রবেশ আটকানোর দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)। আর বিএসএফ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে।